নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে রণকৌশল তৈরির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। মাঝে খানিকটা দুরত্ব তৈরি হয়েছিল দুই তরফের। সেই দুরত্ব আপাতত ঘুচেছে। আর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দুরত্ব ঘোচার পরেই পদ্ম শিবিরের হয়ে পরোক্ষে প্রচার চালানো শুরু করে দিয়েছেন স্বঘোষিত ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। মূলত বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে খুশ করার জন্য রাহুল গান্ধি-সহ কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটকে নিশানা করে লাগাতার মন্তব্য করে চলেছেন। বিজেপির পক্ষে হাওয়া তোলার জন্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লোকসভার ভোটের সম্ভাব্য ফল হিসাবে আজগুবি পরিসংখ্যান হাজির করার অভিযোগ উঠেছে প্রশান্তের বিরুদ্ধে।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের পরেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব প্রশান্ত কিশোরকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। আর পদ্ম শিবিরের ওই অপমান হজম না হওয়ায় নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের ‘সবক’ শেখাতে কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার খেলায় নেমেছিলেন। প্রথমে তাঁকে খানিকটা বিশ্বাসও করেছিলেন বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খার কথা জানতে পেরেই দুরত্ব তৈরি করেন রাহুল গান্ধি-এম কে স্ট্যালিনরা।
সূত্রের খবর, কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিতে কোমর কষে ঝাঁপিয়ে ছিলেন স্বঘোষিত ভোট কুশলী। কিন্তু সেই কৌশল ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধিরা। আর তার পরেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছাকাছি পৌঁছতে নিজের পরিচিতদের ব্যবহার করেন প্রশান্ত কিশোর। পদ্ম শিবিরের চার শীর্ষ নেতার সঙ্গে গোপনে বৈঠকেও বসেন। ওই বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, লোকসভা ভোটের ফলাফল নিয়ে মনের মতো ভবিষ্যদ্বাণী করে বিরোধী শিবিরের কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ভাঙার কাজটা সুকৌশলে চালাবেন আইপ্যাকের প্রতিষ্ঠাতা। গত মাস খানেক ধরেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে মোদির তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার ভবিষ্যদ্বাণী করে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর। পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ ভারতে বিজেপির জয়রথ ছুটে চলবে বলে আজগুবি দাবিও করে চলেছেন। এমনকি পশ্চিমবঙ্গে গতবারের চেয়েও এবার বিজেপির ফল আশাব্যঞ্জক হবে বলে দাবি করে চলেছেন। রবিবারও ফের মোদি-শাহের সুরে সুর মিলিয়ে রাহুল গান্ধিকে আক্রমণ শানিয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপিতে ফেরার রাস্তা প্রশস্ত করতেই গেরুয়া শিবিরের জয়গান গাইছেন প্রশান্ত কিশোর।