নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: পাক সেনার হাতে ‘বন্দি’ বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ‘মুক্ত’ করতে পাকিস্তানের দিকে ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল ভারতীয় সেনা। আর ওই খবর জানার পরেই রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিলেন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। মাঝ রাতেই মোদির সঙ্গে কথা বলার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েছিলেন। যদিও পাক প্রধানমন্ত্রীর ফোনই ধরেননি নরেন্দ্র মোদি। আর তাতেই ভয় পেয়ে পরের দিন অভিনন্দন বর্তমানকে সসম্মানে মুক্তি দিয়েছিল পাকিস্তান। আত্মজীবনী ‘অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্ট’-এ এমনই অজানা তথ্য খোলসা করেছেন ইসলামাবাদে নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত অজয় বিসোরিয়া।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় ভারতীয় সেনা কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল পাক মদতপুষ্ঠ জঙ্গিরা। ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ভারতীয় সেনার ৪০ জওয়ান। ওই হামলার পরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল মোদি সরকার। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের এফ-১৬ বিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপতিত হয়েছিল ভারতীয় বাথয়ু সেনার একটি হেলিকপ্টার। পাক সেনার হাতে বন্দি হয়েছিলেন বায়ু সেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্য দিল্লির তরফে ইসলামাবাদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
তার পরেই পাকিস্তানকে সবক শেখাতে ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র তাক করা হয়েছিল পাক ভূমি লক্ষ্য করে। ওই খবর জানতে পারার পরেই থরহরি কম্প শুরু হয় পাক প্রশাসনের অন্দরে। সেই সময়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন প্রবীণ কূটনীতিবিদ অজয় বিসোরিয়া। ২৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তাঁকে ফোন করেন দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানের উপরাষ্ট্রদূত সোহেল মাহমুদ। তিনি বিসোরিয়াকে জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান পাক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারছেন না। ওই ফোন পেয়ে দিল্লিতে যোগাযোগ করেন বিসোরিয়া। কিন্তু দিল্লি থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইমরান খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে আগ্রহী নন মোদিজি। কোনও বার্তা থাকলে পাক কর্তৃপক্ষ জানাতে পারে। দিল্লির সেই বার্তা সোহেল মাহমুদকে জানিয়ে দেন বিসোরিয়া। আর তার পরের দিনই সসম্মানে অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দেয় পাক কর্তৃপক্ষ।