নিজস্ব প্রতিনিধি: নির্মম, নিষ্ঠুর, ভয়ঙ্কর, মর্মান্তিক। কোনও কিছুই সম্ভবত যথেষ্ট শব্দ নয় এই ঘটনাকে বর্ণনা করার জন্য। তবে কিছুটা হলেও সুবিচার এল ঘটনার প্রায় ৪ বছরের মাথায়। ২০১৯ সালের ১৮ জুন খুন হয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের(Jharkhand) সেরাইকেলা(Seraikela) থানার ধাতকিদিহি গ্রামের বাসিন্দা তবরেজ আনসারি(Tabrej Ansdari)। লোহার রড, বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে খুন(Murder) করা হয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনায় মোট ১৩জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সকলের নামে চার্জশিটও যমা পড়ে। ওই ঘটনাতেই সেরাইকেলা আদালত গত ২৭ জুন ১০জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। ২জনকে প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়। ১জন বিচারচলাকালীন সময়ে মারা যান। দোষী সাব্যস্ত ১০জনকে আদালত(Court) বুধবার ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। সঙ্গে প্রত্যেকের ১৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় সাজা দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
২০১৯ সালের ১৭ জুন ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা জেলার খারসাওয়ান এলাকা দিয়ে দুজনের সঙ্গে জামশেদপুরে যাচ্ছিলেন তবরেজ৷ সেই সময় সময় চোর সন্দেহে বেশ কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে৷ সুযোগ বুঝে দুই সঙ্গী পালিয়ে যায়৷ উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার হন তবরেজ৷ স্থানীয়রা কেউ লাঠি, কেউ রড, কেউ বাঁশ, কেউ বা হাত দিয়ে তবরেজকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে৷ আক্রমণকারীদের কাছে কাকুতি মিনতি করলেও কোনও লাভ হয়নি৷ একটানা প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে এভাবেই তবরেজের ওপর চলে অকথ্য অত্যাচার৷ মারধরের পাশাপাশি তবরেজকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ৷ তবরেজকে না বাঁচিয়ে, অমানবিকভাবে তাঁর ওপর অত্যাচারের ছবি-ভিডিও মোবাইল বন্দি করতেও দেখা গিয়েছে অনেককেই৷ সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷ এরপর পুলিশই তবরেজকে উদ্ধার করে। তাঁকে প্রথম কয়েকদিন থানাতেই রাখা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ২২ জুন সেখানেই প্রাণ হারান তবরেজ।
এদিন আদালত সেই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া এবং আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়াপ্রকাশ মণ্ডল ওরফে পাপ্পু মণ্ডল, ভিম সিংহ মুণ্ডা, কমল মাহাতো, মদন নায়াক, অতুল মাহালি, সুনামো প্রধান, বিক্রম মণ্ডল, চামু নায়াক, প্রেমচাঁদ মাহালি, মহেশ মাহালিকে এদিনই পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, আনসারির পরিবার রাঁচী আদালতে যাচ্ছে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে। যেভাবে তরবেজকে মারা হয়েছে তার জন্য মাত্র ১০ বছরের শাস্তি খুবই সামান্য। তাই তা৬রা উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন।