নিজস্ব প্রতিনিধি: ৪৮ ঘন্টা অতিক্রান্ত। এখন অনেকটাই স্বাভাবিকের পথে তিস্তা(Teesta River)। আর সেই স্বাভাবিকের মধ্যে থেকেই উঠে আসছে একের পর এক দেহ(Body Recovering)। শুক্রবার দুপুর অবধি ২২জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে তিস্তার বুক থেকে। এদের মধ্যে ৬টি দেহ মহিলাদের। ১৬টি দেহ পুরুষদের। তাঁদের মধ্যে ৪টি দেহ নিখোঁজ সেনা জওয়ানদের। ওই ২২টি দেহের মধ্যে একটি দেহের আবার শুধুমাত্র দেহাংশ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া দেহগুলির মধ্যে ১টি দেহ আবার রাজ্যেরই এক বাসিন্দার। কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার বাসিন্দা রাহুল মোদকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত নিখোঁজের সংখ্যা সরকারি ভাবেই ২০০ ছুঁইছুঁই।
এদিকে বিপর্যয়ের জেরে জ্বালানি ও খাদ্য সঙ্কটের মুখে পড়েছে সিকিম। সমতলের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাই জ্বালানিবাহী কোনও ট্যাঙ্কার সিকিমে যেতে পারছে না। সমতল থেকে উঠছে না ফল, সবজি সহ নিত্যপণ্যের গাড়িও। ফলে ভাঁড়ারে টান পড়েছে সেখানে। ব্যাহত ওষুধের জোগানও। সিকিমের পাম্পগুলিতে ক্রমশই ফুরিয়ে আসছে মজুত তেলের পরিমাণ। বাধ্য হয়ে জ্বালানি নিয়ে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেচ্ছে সিকিম সরকার। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির জেরে অহেতুক জ্বালানি মজুত করতে পারবেন না কেউ। পাম্প থেকে দিনে গাড়ি পিছু সর্বোচ্চ ২০ লিটার ডিজেল কিংবা ১৫ লিটার পেট্রল কেনা যাবে। কোনও জারে করে তেল কিনে নিয়ে যাওয়া যাবে না। পাশাপাশি প্রতিটি পাম্পকে কমপক্ষে দেড় হাজার লিটার তেল সবসময়ের জন্য মজুত রাখতে হবে যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে ওই তেল দিয়ে পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখা যায়। শুধু জ্বালানি নয়, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিলিগুড়ি থেকে খাবার এবং ওষুধপত্রও সিকিমে যেতে পারছে না। শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেট সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে সিকিমে ফল, সবজি, ফলের কোনও গাড়ি যাচ্ছে না। শিলিগুড়ি থেকে প্রতিদিন ১০-১২ গাড়ি খাদ্যসামগ্রী সিকিমে যায়।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার(Bengal) প্রায় ৭০০ পর্যটক(Tourist) এখনও আটকে রয়েছে সিকিমে(Sikkim)। একই সঙ্গে আরও ২০০জনের মতো পর্যটকের সঙ্গে কোনওরকম ভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তাঁরা জীবিত না নিখোঁজ সেই সম্পর্কে কোনও তথ্যই মিলছে না। এর মধ্যে বীরভূম জেলার একটি পরিবারের ৮জন সদস্য রয়েছেন। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একটা বড় অংশই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সেই রাস্তা স্বাভাবিক হতে খুব কম করেও ৬ মাস লাগবে। এই অবস্থায় বাংলা সহ দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে সড়কপথে সিকিমের যোগাযোগ গড়ে তোলার জন্য বিকল্প রুটের সন্ধান দিয়েছে সিকিম সরকার। সে রাজ্যের পরিবহণ দফতর থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের পথে দুটি রুট চালু করা হচ্ছে। গ্যাংটক যাওয়ার জন্য ছোট গাড়ি যাবে সেবক সেতু, গরুবাথান, লাভা, রংপো হয়ে। বড় ও ভারী গাড়ি যাবে গজলডোবা, ডামডিম, গরুবাথান, লাভা, রোরাথাং, রানিপুল হয়ে। এই একই পথে গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি আসা যাবে। দ্বিতীয় রুটট সিকিমের দক্ষিণ পশ্চিম এলাকায় যাওয়ার জন্য। সেক্ষেত্রে ছোট গাড়ি দার্জিলিং, সিংলা, নামচি অবধি যেমন যেতে পারবে তেমনি বড় ও ভারী যান গজলডোবা, ডামডিম, গরুবাথান, লাভা, কালিম্পং, মেল্লি হয়ে নামচি যেতে পারবে।