নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপরে হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখল শীর্ষ আদালত। যদিও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে গিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ যে মন্তব্য করেছিল, তা বাদ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের এদিনের নির্দেশের ফলে সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের ক্ষেত্রে আর বাধা রইল না।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় উত্তর ২৪ পরগনার দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে জেরা করতে গিয়ে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় জনরোষের মুখে পড়েছিলেন ইডির আধিকারিকরা। কোনও রকমে বেঁচে ফেরেন তারা। গত ১৭ জানুয়ারি ইডির দায়ের করা মামলায় সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে যৌথ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। ওই যৌথ তদন্তকারী দলে সিবিআই ও রাজ্য পুলিশের এসপি পদমর্যাদার দুই আধিকারিক নেতৃত্ব দেবেন বলে রায়ে জানান তিনি। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় ইডি।
গত ৫ মার্চ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ খারিজ করে দিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এমনকি ওই দিন বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে ইডির উপরে হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তরের নির্দেশও দেন বিচারপতিরা। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ওই দিনই জরুরি শুনানির আর্জি জানিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। ফলে সিবিআইয়ের হাতে শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তর প্রক্রিয়া আটকে যায়। পরের দিন ৬ মার্চ জরুরি শুনানির আর্জি খারিজ করে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানিয়ে দেন, সিবিআই তদন্ত নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশে এখনই হস্তক্ষেপ করা হবে না। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে জরুরি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন। শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খাওয়ার ফলে ওই দিনই শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় সিআইডি।
এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সন্দেশখালিকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে হস্তক্ষেপের কারণ নেই। তবে রায়ে রাজ্য সরকার ও রাজ্য পুলিশ সম্পর্কে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে পর্যবেক্ষণ মন্তব্য করছে তা বাদ দিতে হবে।