-273ºc,
Saturday, 3rd June, 2023 3:04 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: কুমোরটুলির অন্দরে গিয়ে একটু খোঁজ নিলেই জানা যাবে মহিলা মৃৎশিল্পী কাকলি পালের কথা। কুমোরটুলির সাপের মত এঁকেবেঁকে চলা গলির শেষে কাকলির ঘর। সংসারের কাজ আর ঠাকুর গড়া দুইই নিজের হাতে সামলান তিনি। পরিবারে আছেন এক মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। জীবনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে কাকলি কাজ শিখেছিলেন। সংসারের মাথায় তখন ভেঙে পড়েছিল গোটা আকাশটাই। কাকলির বাবা ছিলেন পাশে।
এই মুহূর্তের ক্যামেরা যখন গিয়ে পৌছাল কাকলির দোরগোড়ায় কাকলি তখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠাকুর তৈরি করার। মুখে অমলিন হাসি আর নমনীয়তায় ভরা তাঁর আতিথেয়তা। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁর মুখে হাসি সবসময়। সাক্ষাৎকার শেষে উঠে গিয়ে হাত লাগালেন কারিগরের সঙ্গে কাজে। নাহলে ঠাকুর তৈরি হবে কেন? এভাবেই কাকলি সংসারের ছাতা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। ছাতার নীচে সুখে বাঁচে তাঁর সংসার, সন্তান আর তাঁর স্টুডিও। কাকলিদের মত বাকি মহিলা যারা কুমোরটুলিতে কাজ করছেন তাঁদের কাছে সবটাই ‘ দুর্গা সহায়’ এই ভেবেই চলে।
কাকলির স্বামী যখন মারা যান তখন কাকলি শুধুমাত্র একজন গৃহবধূ। ঘরের বাইরে শাশুড়ি সেভাবে কখনও বেরোতে দেননি। কিন্তু পরিস্থিতি যখন এমন উল্টো স্রোতে হাঁটে তখন তো আর কিছু করার নেই। তাই ধীরে ধীরে মূর্তি তৈরি করা শিখেছে কাকলি। নিজে বাঁচার পাশাপাশি দুটো দুধের শিশুকে বাঁচানোই ছিল তাঁর কাছে একটা বড় দুশ্চিন্তা। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে কাকলি উঠে দাঁড়িয়েছেন। আজ তিনি প্রতিমা গড়েন। কারিগরদের সঙ্গে হাত লাগান কাজে। এই কাকলিরাই আমাদের সমাজের সত্যিকারের দশভূজা, ‘আমাদের দশভুজা’।