এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

ব্যারাকপুর ‘আনন্দ নিকেতন’ জুড়ে পুজোর আমেজ, আপনিও কী এই খুশিতে ভাগ বসাতে চান!

সুস্মিতা ঘোষ: আকাশে-বাতাসে পুজোর গন্ধ। দুই বছর পর শহর ফের সেজেছে দেবী দুর্গার আরাধনায়। করোনা বন্দি জীবন থেকে কিছুটা সুখের বাতাবরণ। মা দুর্গা আসছেন, চারিদিকে রমরমা আলোর রশনাই। পুজো মণ্ডপ তৈরির কাজও ইতিমধ্যেই শেষ। আর কিছুদিন পর থেকেই দলে দলে ভিড় জমবে মন্ডপ গুলিতে, জায়গায় জায়গায় কত আড্ডা জমাবে সবাই। পুজোর এই চারটে দিনকে ঘিরে কতই না উন্মাদনা বাঙালির মধ্যে। কেনই বা হবে না সারাবছর এই চারটে দিনের অপেক্ষাতেই দিন গোনেন সবাই। নতুন নতুন জামা-কাপড় কেনার ঢল, পার্লারে পার্লারে নিজেকে সুন্দর করে তোলার সমস্ত রকম চেষ্টা। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে এই চারটে দিন আনন্দে মেতে থাকেন সকলেই। দুঃখ-কষ্ট সব আলমারিতে তুলে রেখে মা আসার আনন্দে মেতে থাকেন সবাই। কারণ পুজো তো সবার। যে ছেলেটি অনাথ সেই ছেলেটিরও পুজোতে আনন্দ অধিকার রয়েছে, আবার যে বাবা-মাদেরকে সন্তানরা বাড়তি বোঝা মনে করে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে গিয়েছেন, তাঁদের কাছেও পুজোটা আনন্দের। তবে হ্যাঁ, সারাবছরের তুলনায় এই কটা দিন বাড়ির জন্যে একটু বেশিই মন কেমন করে তো বটেই, কিন্তু সেই সব বৃদ্ধা বাবা-মা দের, দুঃখ সবটাই যেন নিমেষেই ভুলিয়ে দেয় সেই সব বৃদ্ধাশ্রমগুলির কর্তৃপক্ষরা।

সম্প্রতি আমরা যোগাযোগ করে নিয়েছিলাম, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুরের একটি বৃদ্ধাশ্রমের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। পুজোর সময় তাঁরা তাঁদের আশ্রমের বাসিন্দাদের কী ভাবে রাখেন, সেটাও জেনে নিয়েছিলাম। আশ্রমটির নাম, আনন্দ নিকেতন। প্রায় ২০ জন সদস্যদের নিয়ে আনন্দ নিকেতন পরিবার। যেখানে শুধু বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাই আছেন তা নয়, আছেন কিছু অনাথ বাচ্চারাও এবং আছেন আর্থিকভাবে অক্ষম কিছু পরিবারের সন্তানরাও। তাঁদের নিয়েই সংসার আনন্দ নিকেতনের। সবাইকে সুন্দরভাবে প্রতিপালন করছেন এই হোমের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীমতি Camille Johnson। যিনি প্রায় ২৩ বছর ধরে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর অধীনে শুধু একটাই নয়, তিনটি অর্গানাইজেশন রয়েছে। যেখানে তিনি আশ্রয় দিয়েছেন, পতিতাপল্লীর নারীদের সন্তানদের, আশ্রয় দিয়েছেন বয়স্ক দাদু-দিদাদের, আশ্রয় দিয়েছেন ১ থেকে ১৮ বছরের নাবালিকাদের, এছাড়াও তিনি আশ্রয় দিয়েছেন পথ শিশুদেরও।

যাঁদেরকে তিনি নিজ দায়িত্বে পড়াশোনা শেখাচ্ছেন, বিভিন্ন হাতের কাজ শেখাচ্ছেন, বড় করছেন। সুতরাং তাঁদের সুন্দর জীবনের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এই অভূতপূর্ব পরিকল্পনার পেছনে তাঁর একটাই লক্ষ্য, মানুষের কল্যাণ, সেই সমস্ত অনাথ শিশুদের পড়াশোনা করিয়ে সমাজের বুকে তাঁদের প্রতিষ্ঠা করে দেওয়া এবং বৃদ্ধারাও যাতে শেষ বয়সে পরিবারের মতোন করেন কিছুদিন কাটিয়ে যেতে পারেন সেটার দেখভাল রাখা। এমনকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর সংস্থার আরো সদস্যদের সঙ্গে মিলে নানারকম আয়োজন করে থাকেন। যেমন পুজো, পুজোর দিনগুলিতেও আনন্দ নিকেতন সেজে উঠেছে পুজোর আমেজে। শিশু থেকে বৃদ্ধা সবাই নতুন নতুন পোশাকে সেজে উঠবেন এই দিনগুলিতে। পাশে এই চারটে দিন অন্যান্য দিনের থেকে একটু আলাদাই খাবারের আয়োজন করা হবে সকলের জন্যে। শুধু তাই নয়, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্যে আলাদা করে বাসের আয়োজন করা, তাতে করে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাওয়া সবটাই একা হাতে সামলান তিনি। এছাড়াও, এখানে যে সমস্ত অনাথ বাচ্চারা আছেন তাঁদেরকে বিভিন্ন সময়ে নাচ-গানের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। তাঁরা পুজোর এই দিনগুলিতে পাড়ায় পাড়ায় অনুষ্ঠান করে, সমস্ত ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় এই সংস্থার থেকেই। আর এই সবকিছু করা একটাই কারণ যাতে সবাই একটু আনন্দ পায়, বাড়ির কথা যেন মনে না পড়ে দুঃখ পায়। একেবারে বাড়ির মতই তাঁরা এই সারাবছর আনন্দে কাটায়, যত্ন পায়।

আমরা এই বৃদ্ধাশ্রমের দুই দিদা-দাদুর সঙ্গেও কথা বলেছি। তাঁরাও পুজোর দিনগুলিতে কী ভাবে কাটান আশ্রমে তা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁদের কথায়, প্রায় তিন বছর ধরে আছেন তাঁরা। পুজোর দিনে বাড়ির কথা মনে পড়লেও আশ্রম সব ভুলিয়ে দেয়। যখনই যেখানেই যান তাঁরা স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গেই যান। নতুন জামা-কাপড় আশ্রম থেকেই দেওয়া হয় তাঁদের। তবে শারীরিক অসুস্থতার জন্যে তাঁরা ঘুরতে যেতে পারেন না। তবে হ্যাঁ, পাড়াতেই হাসি মজা করে কাটান। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলীও দেন। বাড়ির কথা মনে পড়লেও দুঃখে থাকেন না তাঁরা।

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা দারুণভাবে সহযোগিতা করেছেন আমাদের। তাঁকে আমাদের তরফ থেকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁর এই অভূতপূর্ব পরিকল্পনা শুনে আমরা তাঁর কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। তিনি এইভাবেই সকলের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলুন সারাজীবন সেটাই কামনা করি। আর আমাদের ‘এই মুহূর্তে’ এর দর্শকদের জানাই আপনারাও যদি আনন্দ নিকেতনের সঙ্গে সহযোগিতা করেন তাহলে আগামী দিনে সবাই আরও উপকৃত হবেন।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

‘ভোট ফর মা’ এই স্লোগানে টালার অলিগলির দেওয়াল রাঙিয়ে তুললেন মহিলারা

শাশুড়ি-বউমার সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত?

জানেন কী, ভূত চতুর্দশী কেন পালিত হয়, ১৪ শাকই বা কেন খাওয়া হয়?

কালীপুজোর রাতে প্রদীপের শিখাতে ঘুরবে ভাগ্যের চাকা

কালীপুজোর দিন রাতে আগুন এড়াতে এই ধরণের পোশাক পরুন..

লোহা এবং ফাইবার দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৮০ ফুটের কালী প্রতিমা, জনজোয়ারে ভাসবে ব্যারাকপুর

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর