নিজস্ব প্রতিনিধি, বালুরঘাট: সময় বদলেছে, পরিস্থিতি বদলেছে। কিন্তু আজও বংশ পরম্পরায় একই রীতি-রেওয়াজ মেনে পুজো হয়ে আসছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের সরকার বাড়িতে। এখন পুজোর দায়িত্বে রয়েছে সরকার বাড়ির পঞ্চম পুরুষ। পুরোহিত থেকে ঢাকি, এমনকী, ফুলের জোগান দেওয়া ব্যক্তিটিও বংশ পরম্পরায় এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। কিছুটা জৌলুস হারালেও এখনও বালুরঘাটের যে কোনও বারোয়ারি পুজোকেও টেক্কা দেয়।
বাড়ির সদস্য ব্রতময় সরকার জানান, তখন বাংলায় ১২৮২ বঙ্গাব্দ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার রিস্তারা এলাকায় তৎকালীন এলাকার জোরদার রূপকান্ত সরকার এলাকার মঙ্গল কামনায় দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। সেই থেকে শুরু, তারপর থেকে প্রায় ১৪৫ বছর ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের প্রত্যন্ত রিস্তারা এলাকার সরকার বাড়িতে আসছেন মা দুর্গা। এবছর ১৪৬ বছরে পা দিল এই পুজো। পুজোর পাঁচদিন ধরে হয় মঙ্গলচণ্ডীর গান।
পরিবারের আর এক সদস্য অঞ্জলি সরকার জানান, বাড়ির পুজোয় পুরোহিত থেকে ঢাকিও বংশ পরম্পরায় চলে আসছে। পুজোর পাঁচদিনই ধরে মঙ্গলচন্ডীর গান হয়। ১৪৫ বছর ধরে চলে আসছে এই মঙ্গলচন্ডীর গান নিরলস ভাবে। এই বাড়িতে মা বৈষ্ণব মতে পূজিত হন। মাকে কোনও অন্নভোগ দেওয়া হয় না। ভোগে দেওয়া হয় ফলমূল, লুচি, সুজি-সহ বিভিন্ন সবজি ভাজা। রান্না করেন বাড়ির মহিলারাই। বোধনের শুরু করে থেকে পুজোর দিনগুলিতে সরকার পরিবারের লোকেরা নিরামিষ খাবার খানা।
অতীতে এই পুজোর জৌলুস ছিল অনেকটাই। পরিবারের আর এক সদস্য সৌমেন্দ্রনাথ সরকার জানান, আগে পাঁচদিন ধরেই বসত যাত্রাপালা। কালের নিয়মে সরকার বাড়ি সেই জৌলুস অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে। যাত্রাপালার চল এখন আর নেই। তবে এখনও চামুণ্ডা মায়ের নাচ হয়। বারোয়ারি পুজোর হরেক রোশনাইয়ের মাঝে আজও নজর কাড়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার রিস্তারা এলাকার সরকার বাড়ির এই পুজো।