এই মুহূর্তে




দশভুজা রূপে নন, দেবী এখানে পুজিতা হন ‘দুই’ হাতেই

নিজস্ব প্রতিনিধি : পুজোর আনন্দে উৎসবে মেতে উঠেছে বাঙালি। আজ হল মহাসপ্তমী। চারিদিকে শুধু ঢাকের আওয়াজ। দু্র্গাপুজো এলেই দেখা যায় আঝও স্বমহিমায় জ্বলজ্বল করছে বনেদি বাড়ির পুজো। সূদুর অতীত থেকে এখনও পর্যন্ত আজও নিয়ম-রীতি মেনে চলে আসছে মাতৃ আরাধনা। শুধু বাংলায় নয়, বাংলার বাইরে আরও একটি রাজ্য আছে সেখানেও পুজো হয় ধুমধাম করে। বলা যেতে পারে, আমাদের দেশের বাঙালিদের দ্বিতীয় আস্তানা ত্রিপুরার দুর্গাপুজো। আর সেখানকার দুর্গাপুজোর কথা উঠলে প্রথমেই আসে দুর্গা বাড়ির পুজোর কথা। এখানে মা দশভুজা নন, মা হলেন দ্বিভুজা।

ত্রিপুরায় রাজবংশ প্রতিষ্ঠার পরেই সেখানে দুর্গা পূজার সূচনা হয়। এই রাজবংশে দেবী দুর্গার আরাধনার প্রথম প্রামাণ্য নিদর্শন মেলে মহারাজা রত্ন মাণিক্য (রাজত্বকাল ১৪৬৪-৬৭ খ্রিস্টাব্দ)-র মুদ্রায়। তবে সেই পুজো শারদীয়া ছিল না, ছিল বাসন্তি। অর্থাৎ,সেই পুজো হত বসন্তকালে। পুজো হত রাজবংশের দুর্গা মন্দিরে। রাজাদের আমলে শুরু হওয়া এই পুজো প্রায় ৫০০ বছর পার হতে চলল।

উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদের বয়স ১২০ বছরেরও বেশি। তবে এই বাড়ির দুর্গা একেবারে আলাদা। দুর্গা বাড়ির মা মহামায়া দাঁড়িয়ে আছে দুই হাত নিয়ে। মানে দেবী এখানে দ্বিভুজা। দেবীর বাকি আটখানি হাত শাড়ির আঁচল দিয়ে ঢাকা থাকে। আর এই রূপেই দীর্ঘদিন ধরে মা এখানে পূজিতা হয়ে আসছেন।

দুই হাতের কাহিনী : দেবীর দুই হাতে পুজো নিয়ে নানা ধরনের লোক কাহিনী প্রচলিত আছে। কথিত আছে, সনাতনী নিয়ম অনুযায়ী, দেবতার অন্নভোগের সময় কাউকে সামনে থাকতে নেই। একদিন শারদীয়া দুর্গাপুজোর সময় নিয়ম মেনে মা দুর্গাকে দ্বিপ্রাহরিক অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। তখন রাজপুরোহিতের অনুমতি না নিয়েই দেবীর ভোগ দর্শনের জন্য দরজা খুলে ফেলেন ত্রিপুরার মহারাজা কৃষ্ণকিশোর মাণিক্যর স্ত্রী তথা ত্রিপুরার মহারানি সুলক্ষণা।

তবে দরজা খুলেই তিনি দেখেন যে মা দুর্গা তাঁর দশ হাত দিয়ে অন্ন গ্রহণ করছেন। এই দৃশ্য দেখে তিনি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এইদিন রাতেই মা দুর্গা রানিকে স্বপ্নাদেশ দেন যে, পরের বছর থেকে যেন দুই হাতেই দুর্গা মূর্তি পুজো করা হয়। সেই থেকে মা এখানে দ্বিভুজা। তাই বাকি আট হাত চুল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। দুই হাত প্রকাশ্যে রাখা হয়।

এরপর থেকে রানি প্রতিটি প্রতিমা দেখে প্রণাম জানাতেন। তারপর সুসজ্জিত হাতি, ঘোড়া, সেনাবাহিনীকে সামনে রেখে শুরু হত শোভাযাত্রা। রাজবংশের বিভিন্ন সদস্যদের বাড়ির প্রতিমাগুলি সারিবদ্ধ ভাবে বাঁশের মাচায় চাপিয়ে কাঁধে নিয়ে দশমীঘাটের দিকে শোভাযাত্রা এগিয়ে যেত।

উল্লেখ্য, আগে ত্রিপুরার রাজাদের রাজধানী ছিল উদয়পুরে। ফলে দুর্গা মন্দিরটিও ছিল সেখানে। পরবর্তী সময়ে অমরপুর এবং আগরতলার পুরাতন হাভেলিতে মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে মন্দিরটি রয়েছে ত্রিপুরার উজ্জয়ন্ত রাজপ্রাসাদের সামনে। আগরতলায় দুর্গাবাড়ি মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৩৮ সালে। এর প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজা কৃষ্ণ কিশোর মাণিক্য বাহাদুর।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ভারতীয় পতাকা উড়িয়ে বিদ্বেষীদের জবাব, পাক র‍্যাপার তালহা আঞ্জুমের কাণ্ডে অবাক নেট দুনিয়া

মাটিতে বসেই দর্শন, তারকাসুলক অহংকে দূরে রেখে বিশ্বনাথ মন্দিরে অঞ্জলী ও সারা

সোনাগাছির যৌনকর্মীরা কার্তিক পুজোয় মেতে উঠলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে

ফের ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’র শিকার, এবার ৩২ কোটি টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত বেঙ্গালুরুর মহিলা

ব্যক্তিগত বিমান থেকে নিউইয়র্কে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, ‘মিস ইউনিভার্স’ বিজয়ী আর কী কী পুরস্কার পান?

বিলাসবহুল হোটেলের ম্যানেজারকে নগ্ন করে ধাতব পাইপ দিয়ে মারধর, ভিডিও ভাইরাল হতেই গ্রেফতার মালিক

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ