এই মুহূর্তে




৫১০ বছরের দুর্গাপুজো, ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে হয়েছে নরবলি!




নিজস্ব প্রতিনিধি: এই বাংলায় দুর্গাপুজোর প্রচলন ও পরিচালনার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। তাই পুরোনো দুর্গাপুজোর ইতিহাসে রহস্য ও রোমাঞ্চের গন্ধ থাকা অস্বাভাবিক নয়। একটু ইতিহাস ঘাঁটলেই পাওয়া যাবে বেশ কয়েকটি প্রাচীন পুজোর, যেখানে এমন কিছু রীতিনীতি প্রচলন ছিল যা কিনা আজকের দিনেও গায়ে কাঁটা দিতে বাধ্য করবে। এরকমই এক প্রাচীন পুজোর গল্প এই মুহূর্তে-র পাঠকদের বলছি।

জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির পুজো ৫১০ বছরে পরল। প্রাচীন এই পুজোর ইতিহাস একদিকে যেমন রোমহর্ষক অন্য়দিকে ঐতিহ্যবাহী। জানা যায়, ১০০ বছরের বেশি সময় এই পুজোয় নরবলি হয়েছে, এবং সেই রক্তেই মায়ের পুজো হতো। তবে কালের নিয়মে বলি নিষিদ্ধ হলেও আজও চালের গুড়ো দিয়ে মানুষের প্রতিকৃতি তৈরি করে তাকে বলি দেওয়া হয়। তাছাড়াও আটটি পায়রা বলি দিয়ে উৎসর্গ করা হয় মা দুর্গাকে। এছাড়া নবমীর দিন স্থানীয়রা এই পুজোতে পাঁঠা, হাঁস, চাল কুমড়ো এবং আখ বলি দেন মনস্কামনা পূর্ণ করার জন্য। কারণ কালিকা পুরাণ মতে মা দুর্গার পুজা করা হয় জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে।

অনেক অজানা ইতিহাস জড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির পুজোর সাথে। উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন পুজো এটি, আজও রাজবাড়ির সদস্য়দের সঙ্গে সাধারণ মানুষ একসাথে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন। তাই জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির পুজো মানেই এক বিশেষ আবেগ। নরবলি বন্ধ হয়েছে প্রায় ৪০০ বছর আগে। তবু অনেক প্রাচীন রীতিনীতি আজও পালিত হয় এই পুজোয়। দেবীকে প্রসাদ হিসেবে নিবেদন করা হয় রুই, কাতলা, ইলিশ, বোয়াল এবং চিতল মাছ। এছাড়া দেবীর স্নানের জল আনা হয় হরিদ্বার, মথুরা, বৃন্দাবন এবং মানস সরোবর থেকে। আগেই বলেছি, আজও প্রতীকী নরবলি হয় চালের গুড়োর প্রতিকৃতিতে।

এখানকার দেবী প্রতিমাও বিশেষ রূপবিশিষ্ট। জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে মা দুর্গার সাথে গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতীর মূর্তি যেমন থাকে তেমনই জয়, বিজয়, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, মহামায়া এবং চণ্ডীর মূর্তিও রয়েছে। পুজোর কয়েকটা দিন দেবী দুর্গার গলায় স্থাপন করা হয় নবরত্নের হার এবং মাথায় স্বর্ণমুকুট। দেবীর দশ হাতে রুপোর অস্ত্র শোভা পায়। অসুরের সঙ্গে একযোগে যুদ্ধ করে সিংহ ও বাঘ, তবে সিংহের গায়ের রঙ এখানে সাদা।

কথিত আছে ৫০০ বছর আগে এই পুজোর প্রবর্তন করেছিলেন জলপাইগুড়ি রাজ পরিবারের আদিপুরুষ বিশু সিংহ এবং শিশু সিংহ। সেসময় নরবলি প্রথাও চালু ছিল। কথিত আছে সেই বলির রক্তেই পুজিতা হতেন দুর্গা। আর এই প্রথা পরবর্তী ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে চলেছিল। তবে আজ সেই প্রথা বিলুপ্ত হলেও ষষ্ঠীর বোধন, অষ্টমীর পুস্পাঞ্জালী, সন্ধিপুজো এবং দশমীর দিন সিঁদুর খেলা – এই সব কিছুতেই জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির মন্দির প্রাঙ্গণ থাকে জমজমাট।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

৩০০ বছর ধরে সিংহবাহিনী দেবী রূপে পুজিতা হয়ে আসছেন এই রাজবাড়িতে

পান্তা ভাত-কচু শাক খেয়ে কৈলাসে পাড়ি দেন এই বনেদি বাড়ির উমা

বেলগাছকে দুর্গা রূপে পুজো, আজও বলির নিয়ম চলে আসছে শীল বাড়িতে

‘মানুষরূপী’ অসুর দমনে দেবী দুর্গা! পাঁচবাড়ির এই মণ্ডপে বিশেষ আকর্ষণ

মায়ের স্বপ্নাদেশে শুরু পুজো! দেবীর আট হাত ঢেকে রাখা হয় এই বনেদি বাড়ির পুজোয়

ঘটি-বাঙালের মিশ্রণ, এই বনেদি পুজোয় বাড়ির পান্তা খেয়ে বিসর্জনের রীতি আজও রয়েছে

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর