নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষার অবসান। উমা আসছেন ঘরে। কল্লোলিত আকাশ বাতাস। কাশফুলের গন্ধে শরতের আমেজ। দুর্গাপুজো বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। বছর বছর ধরে সংস্কৃতির বার্তাবহ বাঙালির দুর্গাপুজো। কিছু পুজোর প্রাচীন ইতিহাস নজরকাড়া। তেমনই ঐতিহ্যবাহী এক পুজো হল তেহট্টের কষ্টিপাথরের দেবী দুর্গার পুজো।
একসময় এই মূর্তি উঠেছিল জেলের জালে। প্রতিষ্ঠা করা হয় রানি ভবানীর আমলে। পাঁচশো বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে কষ্টিপাথরের দেবীদুর্গা। নদিয়ার থানারপাড়া থানার দোগাছি গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বয়ে গিয়েছে নদী। ৫০০ বছর আগে এই নদীতে মাছ ধরার সময় এক জেলের জালে ধরা পড়েছিল কষ্টিপাথরের দুটি মূর্তি। তার একটি ছিল দেবী দুর্গার, অপরটি বিষ্ণুমূর্তি।
কথিত আছে, দেবীর স্বপ্নাদেশে রাজবল্লভ সু-পণ্ডিত দ্বারা মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় মাতা রানি ভবানী এই মূর্তির কথা জানতে পেরে দোগাছি গ্রামে বিষ্ণুপুরের ঘরানার ধাঁচে ছোট্ট ইট দিয়ে অপূর্ব টেরাকোটা মন্দির তৈরি করেন। মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন। অবশেষে দুর্গাপুজো উপলক্ষে সেইসময় রাজকোষ থেকে দু টাকা দশ আনা দিয়েছিলেন। সারা বছর পুজোর নানা খরচও পাঠাতেন। মন্দির সংস্কারের জন্য একশো বিঘা জমিও দান করেছিলেন।
এই পুজো ঘিরে মেলা বসত পূর্বে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন। পুজোর নাম রাখা হয়েছিল রাজবল্লভী পুজো। মূল মন্দির সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবলুপ্ত হয়েছে। দুকাটা বাদে বাকি জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা একটি ঘরে মূর্তি দুটিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৪২১ সালে এলাকার মানুষেরা নতুন মন্দির তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন। নতুন উদ্যমে পুজো শুরু হয়েছে।