নিজস্ব প্রতিনিধি: অষ্টমী বা মহাষ্টমী নয়, বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব প্রতিবছর পালন করে বীরাষ্টমী। এর কারণ জানতে ফিরে যেতে হবে ইতিহাসে। এই পুজোর শুরুটাই হয়েছিল বিপ্লবীদের হাত ধরে। বাঙালি বীর জাতি, ইংরেজদের এই বার্তা দিতেই অষ্টমীর দিন বিশেষ কর্মসূচি থাকত অনুশীলন সমিতির বিপ্লবীদের। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে এই দিনটিই ছিল বিল্পবীদের জনসংযোগের এক অন্যতম মাধ্যম।
বাগবাজার সর্বজনীন মানেই ফাকা মাঠে খোলা মণ্ডপ আর তাতেই জ্বলজ্বল করে প্রতিমার চোখ দুটি। চিরাচরিত প্রথা মতো প্রতিমা এখানে সাবেকি। মায়ের সাজ নয়নাভিরাম। বিরাট মুকুট থাকে দেবীর মাথায়। শুরুতে এই পুজোর নাম ছিল ‘নেবুবাগান বারোয়ারি’। কারণ, ১৯১৯ সালে প্রথমবার নেবুবাগানেই আয়োজিত হয়েছিল। সুভাষচন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, আশাপূর্ণা দেবী, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বালক ব্রহ্মচারী, সাহিত্যিক অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের মতো ব্যক্তিত্ব এই পুজোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে ১৯২৬ সালে নাম পাল্টে হয় ‘বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব’ রাখা হয় এই পুজোর।
অষ্টমীর দিন শরীরচর্চা, লাঠিখেলা থেকে শুরু করে নানা শারীরিক কসরতের মাধ্যমে দেবীকে অঞ্জলি দেওয়া হয় সেই সময়। শোনা যায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নাম দিয়েছিলেন বীরাষ্টমী উৎসবের। তার প্রধান কারণ হিসাবে যা উঠে আসে, ব্রিটিশ আমলে একটা ধারণা ছিল সাহেবরাই একমাত্র শক্তিমান ও বুদ্ধিমান। বাঙালি মানেই বোকা, ভীরু, দুর্বল জাতি। সেই ভাবনা মুছে দিতেই বিল্পবীদের বীরত্বের প্রদর্শণী চলত। এই বীরাষ্টমীতে জনতার ভিড়ে মিলেমিশে যেতেন অনুশীলন সমিতির বিপ্লবীরা। তাই বছরের এই দিনটায় অনেক পরিকল্পনা থাকত তাঁদের। এবছর ১০৩ বছরে পা দিল বাগবাজারের পুজো। বর্তমানে বীরত্বের প্রদর্শণীতে যুক্ত হয়েছে জুডো, ক্যারাটে, বক্সিংও।