নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার পুজোপ্রেমীদের কাছে সুশান্ত পাল নামটা মোটেও অপরিচিত নয়। প্রায় দেড়-দুই দশক ধরে কলকাতার দুর্গোপুজোয় তিনি হাজির করে চলেছেন এমন এমন সব থিম যা পুজোপ্রেমীদের শুধু বিস্মিতই করছে না, কার্যত বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধাক্কাও খেতে হচ্ছে। ধাক্কা খাওয়া এই অর্থে নয় যে তাঁরা হতাশ হয়েছেন, ধাক্কা এই অর্থে যে তাঁরা শিল্পীর সৃষ্টিকর্ম দেখে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিলেন। সিনেমার দুর্গোপুজো যে ‘নস্ট্যালজিয়া’ থিমের জন্ম দিতে পারে বা নাকতলার মাঠে মেশিনের কলকব্জা পুজোর মণ্ডপ হয়ে উঠতে পারে কিংবা অজন্তার গুহাচিত্র টালা প্রত্যয়ের পুজোয় প্রশ্ন জাগিয়ে দিতে পারে সেটা আগে কে ভেবেছিল! আর এখানেই শিল্পী সুশান্ত পালের কৃতিত্ব। যিনি শিল্পের সঙ্গে প্রযুক্তির সহবাসে উৎসবের আঙিনায় জন্ম দিয়েছেন এমন এক সৃষ্টিকর্ম যা বাংলা কেন গোটা ভারতের বুকে আগে কেউ কখনও করে দেখাতে পারেননি। সেই সুশান্ত পাল এবারের পুজোয় হাজির টালা প্রত্যয়ের ময়দানে ‘নির্বাধ’ থিম নিয়ে।
কোভিডকালে সুশান্তবাবু এবছর একটিই পুজো করছেন, আর সেটা উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয়। সেখানেই তিনি যে থিম আমাদের সামনে এই বছর তুলে ধরছেন তাঁর নাম, ‘নির্বাধ’। কোভিড থেকে উত্তরণের কথা বলবে ‘নির্বাধ’। গত কয়েক বছর ধরেই টালা প্রত্যয়ের পুজো শহরের অন্যতম তারকা পুজো হিসাবে উঠে এসেছে। প্রতি বছরই তাঁদের প্রয়াস থাকে পুজোপ্রেমীদের সামনে নতুন নতুন থিম, বিষয়বস্তু তুলে ধরতে যা শুধু মানুষের মনে বিস্ময় সৃষ্টি করবে তাই নয়, তাঁকে ভাবতেও বাধ্য করবে। এবার সুশান্ত পালের হাত ধরে তাঁরা আমাদের সেই কোভিডকালের মানব সভ্যতার উত্তরণের কথা শোনাবেন। যারা সুশান্তবাবুর পুজোর ভীষণ ফ্যান, তাঁরা শত ঝড়জল গায়ে মেখেও আসেন তাঁর পুজো দেখতে। এবারেও তাঁরা আসবেন সন্দেহ নেই। আসবেন এসব কিছুর থেকে দূরে থাকা সেই সব মানুষেরাও যারা পুজোর চারদিন এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপ ঘুরে বেড়ান শুধু ঠাকুর দেখার নেশায়। এদের সকলের কাছেই এবার শিল্পী সুশান্ত পালের উপহার থাকবে কোভিড থেকে উত্তরণের কথা।