নিজস্ব প্রতিনিধি: বয়স তাঁর ৬১। তবুও তিনি দৌড়াচ্ছেন। ডবল হ্যাট্রিকের জন্য। ২০২১ সালের পুরনির্বাচনে তিনি নিজ ওয়ার্ড থেকে জয়ী হলে টানা ৬ বার জয়ী হওয়ার এক রেকর্ড গড়ে দেবেন তিনি। হাতের তালুর মতই তিনি চেনেন নিজের ওয়ার্ডকে। চেনেন কোন বাড়িতে কারা কারা থাকেন। স্বাচ্ছন্দ্যে যে কারোর বাড়িতে ঢুকে বসে যান ড্রয়ংরুমে তাঁদের হালহাকিকত জানার জন্য। কারন তিনিই তো ওয়ার্ডের অভিভাবক, পাড়ার অভিভাবিকা। তিনি মীনাদেবী পুরোহিত। ১৯৯৫ সাল থেকে কলকাতা পুরনিগমের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে টানা জিতে আসছেন তিনি। ২০২১ সালের পুরনির্বাচনে তিনি কার্যত ডবল হ্যাট্রিক গড়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছেন। কেননা এবার জয়ী হলেই এই ওয়ার্ড থেকে টানা ৬ বার জয়ের রেকর্ড গড়ে দেবেন তিনি। বিজেপিও তাঁর ওপর আস্থা রেখেছে জয়ের জন্য। তাই দলের নেতারাও সেভাবে মাথা ঘামাচ্ছেন না এই ওয়ার্ড নিয়ে। কেননা তাঁরা জানেন, মীনাদেবীর জন্যই কলকাতা পুরনিগম এই বছরও অন্তত বিজেপি শূন্য, বিরোধী শূন্য হবে না।
২২ নম্বর ওয়ার্ডের অবস্থান উত্তর ও মধ্য কলকাতার সংযোগস্থল পোস্তা এলাকায়। ১৯৮৫ সাল থেকে ওই ওয়ার্ডে জয়ী হচ্ছে বিজেপি। ১৯৮৫ ও ১৯৯০ সালে ওই ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী শান্তিলাল জৈন। এরপরে ১৯৯৫, ২০০০, ২০০৫, ২০১০ ও ২০১৫ সালে ওই ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন মীনাদেবী। অর্থাৎ ২০২১ সালেও মীনাদেবী পুরোহিত এই ওয়ার্ড থেকে জয়ী হলে বিজেপিও কিন্তু টানা ৮ বার জয়ের রেকর্ড গড়বে কলকাতা পুরনিগমের ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ওয়ার্ড থেকে বিজেপি আর মীনাদেবীর এই টানা জয়ের নেপথ্যে কন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে! এই প্রশ্নের উত্তর একটি নয়, দুটি রয়েছে। প্রথমত, ২২ নম্বর ওয়ার্ড হিন্দিভাষী অধ্যুষিত যা বিজেপির চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্ক। আর দ্বিতীয়ত, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জিতে আসার জেরে কার্যত বাড়ি বাড়ি প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে নিরন্তর জনসংযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন মীনাদেবী। সেই সঙ্গে করেছেন কাজও। জলের অভাব, রাস্তায় আলোর অভাব, নিকাষীর অভাব সব সমস্যার সমাধান করেছেন তিনি। কলকাতা পুরনিগমের ক্ষমতায় বাম থাকুক কী ডান, মীনাদেবী তাঁর নিজ এলাকার জন্য প্রকল্প কিন্তু ছিনিয়ে এনেছেন। মানুষও তাই তাঁর পাশে।