নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজের ছবি ‘পাঠান’-কেও যুদ্ধে হারিয়ে দিলো শাহরুখ খানের জওয়ান। মুক্তির আগেই ছবি নিয়ে ভক্তদের মধ্যে এমন উত্তেজনা বোধহয় এই প্রথম নয়। যিনি গোটা প্রজন্মের লাভগুরু, রাত দেখে ছবি দেখার নেশা ধরিয়েছিলেন, সেই শাহরুখ খানেরই একসময় একাধিক ছবি বক্সঅফিসে মুখ থুবরে পড়েছিল। কিন্তু হেরে যান নি, কথায় আছে না ওস্তাদের মার শেষ হাতে! তেমনি নিজেকে আবারও গড়ে পিঠে পাঠান হয়ে ২০২৩ সালে ধরা দিয়েছিলেন তিনি, তাঁর নতুন অবতার আশার মুখ দেখিয়ে ছিল, দেশের বহু বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রেক্ষাগৃহ গুলিতে। কিন্তু পাঠানের চাইতেও জওয়ান যেন সমাজকে আরও নতুনভাবে ইতিহাস গড়ার লক্ষে এগিয়ে নিয়ে গেল। বলিউডের একটাই বাপ তিনি, শাহরুখ খান। ৫৭ বছর বয়সেও তাঁর অভিনয় থেকে মারপিট দেখে রীতিমতো তটস্থ গোটা দেশ। আইনক্স, PVR, সিনেপলিস-সহ একাধিক মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে টিকিটের কাল হাহাকার চলেছে, বাধ্য হয়ে শো ৫ টা থেকে শুরু করলেও একই অবস্থা! দেশের সব প্রান্তেই রীতিমতো উৎসব চলেছে জওয়ান ঘিরে। ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী ১৫০ কোটি আয় করে ফেলেছে এই ছবি।
এছাড়াও মুক্তির আগেই ২০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল জওয়ানের। শাহরুখের জওয়ান শুধুই বিনোদনমূলক ছবিই নয়, সমাজের রাজনৈতিক দিকটাও তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। এই ছবির মাধ্যমে যে মেসেজ দিতে চাওয়া হয়েছিল সেটাও রীতিমতো ভাইরাল। শাহরুখ খান নিজেই নিজের রেকর্ড ভেঙেছেন। ছবিতে শাহরুখের দুর্ধর্ষ অ্যাকশন, মারকাটারি মেকআপ এবং টানটান স্ক্রিপ্ট ছাড়াও শাহরুখের বলা একটি বিশেষ ডায়লগ সবার বেশি নজর কেড়েছে। ছবিটার প্রায় শেষের দিকে একটি দৃশ্যে দেখা যায় আজাদ ওরফে শাহরুখ তাঁর মুখোশ খুলে ফেলেন। এবং লাইভে এসে ভারতের জনগণের কাছে একটা বিশেষ আর্তিতে বলেন, কেউ যেন ধর্ম বা জাতির নামে ভোট না দেন। যেখানে সবাই সামান্য চাল ডাল কিনতে গেলে পরখ করে নিই সেখানে ভোটের আগে কেন ভাবি না, কেন পরখ করি না? তিনি একই সঙ্গে ভোট প্রার্থীদের প্রশ্ন করতে বলেন যে তাঁরা আগামী ৫ বছর কী করবেন নাগরিকদের জন্য? তাঁরা কি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভালো করবেন? চাকরির ব্যবস্থা করবেন? তিনি সোজাসুজি দর্শক তথা ভারতীয় নাগরিকদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে প্রশ্নগুলি করেন।
অভিনেতার চরিত্রের বলা এই সংলাপ মন ছুঁয়েছে সবার। লোকসভা ভোটের আগে এমন বিষয় নিয়ে কথা বলায় উচ্ছ্বসিত ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই টুইট করে লেখেন, ‘ভারতীয় ভোটিং সিস্টেম নিয়ে শাহরুখের ডায়লগটা সেরা।’ আসলে ছবিতে ইভিএম মেশিন, দুর্নীতি সবটা নিয়েও কথা বলা হয়। বাদ যায় নি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুরাবস্থা থেকে কৃষক আত্মহত্যা, সবটাই সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। শাহরুখের ছবি তারকাদের মধ্যেও রীতিমতো হিল্লোল তুলেছে, ক্রিকেট তারকা রিঙ্কু সিং থেকে সিদ্ধার্থ-কিয়ারা সবাই মোটামুটি জওয়ান জ্বরে জর্জরিত। এদিকে টলিউডের সৃজিত মুখোপাধ্যায় থেকে শ্রুতি দাস, অনিন্দ্য সবাই জওয়ান ঝড়ে কাবু। দক্ষিণ পরিচালক atlie পরিচালিত জওয়ান ছবিটি ৭ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে। শাহরুখ খান ছাড়াও এখানে নয়নতারা, বিজয় সেতুপতি, সানিয়া মালহোত্রা, সুনীল গ্রোভার, ঋদ্ধি ডোগরা, সঞ্জিতা ভট্টাচার্য প্রমুখ আছেন। সঞ্জয় দত্ত এবং দীপিকা পাড়ুকোনকে ক্যামিও চরিত্রে গিয়েছে।