নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ৮৮ তম জন্মবার্ষিকী। আজ কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে নবান্নে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন মাননীয় মন্ত্রী শ্রী অরূপ বিশ্বাস। ১৯৫৯ সালে পথচলা শুরু কিংবদন্তির। কিন্তু ২০২০ সালেই স্তব্ধ হয়ে যায় তাঁর পথচলা। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করেছেন অনস্ক্রীন অপু। সুযোগ পেয়েছেন একাধিক কিংবদন্তির সঙ্গে কাজ করার। পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় প্রায় ১৪ টি ছবিতে কাজ করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। অভিনেতা হিসেবে তিনি কিংবদন্তি, কিন্তু আবৃত্তি শিল্পী হিসেবেও তাঁর নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সঙ্গেও উচ্চারিত হয়। তাঁর অভিনীত একাধিক ক্ল্যাসিক চলচ্চিত্র আজও বাঙালিদের মনের কোণায় বিরাজমান।
১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’-ছবির মাধ্যমে তাঁর অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ। পরবর্তীতে মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো একাধিক দাপুটে পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন। সিনেমা ছাড়াও নাটক, যাত্রা, টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন কিংবদন্তি। অভিনয়ের দক্ষতার জোরে তিনি শুধু বাংলায় নন, দেশ-বিদেশেও খ্যাত। তবে অভিনয় নয়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কর্মজীবন শুরু হয় আকাশবাণীর ঘোষক হিসেবে। ৬০ বছর চলচ্চিত্র জীবনে তিনি প্রায় ৩০০’র বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলির তালিকায় রয়েছে, তিন কন্যা, ক্ষুধিত পাষাণ, ঝিন্দের বন্দি, সাত পাকে বাঁধা, সোনার কেল্লা, দেবী, চারুলতা, কাপুরুষ, বাক্স বদল, অশনি সংকেত, বসন্ত বিলাপ, জয় বাবা ফুলুনাথ, হীরক রাজার দেশে, ঘরে বাইরে, বেলা শেষে এবং বেলা শুরু। বিভিন্ন চরিত্রে তিনি সাবলীলভাবে অভিনয় করে গিয়েছেন। তাঁর অভিনীত কিছু কিছু চরিত্র দেখে ধারণা করা হয় যে, তাঁকে মাথায় রেখেই গল্প ও নাটকগুলি লেখা হত। তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করে খোদ সত্যজিৎ রায় একবার বলেছিলেন, ‘তরণ বয়সের রবীন্দ্রনাথ’। সেরা অভিনেতা হিসেবে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক সম্মানিত পুরস্কার।
২০০৪ সালে পদ্মভূষণ, ২০১২ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, ২০১২ সালে দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার ২০১৭ সালে বঙ্গভূষণ সম্মান, ২০১৭ সালে লিজিওন অফ অনার ফ্রান্স সরকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তাঁর অভিনীত কিছু ছবি আজও মানুষের মনের মধ্যে রয়েছে গিয়েছে। বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন একাধিক আইকনিক চরিত্র। ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন মহানায়িকা সূচিত্রা সেনের সঙ্গে অভিনয় করে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তবে তাঁর শেষ চলচ্চিত্র, বেলা শুরু এবং বেলা শেষে বাঙালিদের মনে দারুণভাবে দাগ কেটেছিল। যদিও প্রবীণ অভিনেতার মৃত্যুর পর মুক্তি পেয়েছিল বেলাশুরু। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় অভিনেতার।