নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বেসেডর শাহরুখ খান(Shahrukh Khan)। সেই শাহরুখের সিনেমা ‘পাঠান’(Pathan) গতকাল অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি দেশজুড়ে মুক্তি পেয়েছে প্রায় ৭ হাজার সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্সে। বাংলার বুকেও অজস্র সিনেমা হলে তা মুক্তি পেয়েছে। আর তার জেরে রীতিমত অস্তিত্ব বিপন্নতার মুখে পড়ে গিয়েছে বাংলা সিনেমা(Bengali Cinema)। কেননা অভিযোগ উঠেছে একের পর এক সিনেমা হল থেকে বাংলা সিনেমা নামিয়ে দিয়ে সেখানে ‘পাঠান’ দেখানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় আরও বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে যে বাংলার একের পর এক সিনেমা হলের মালিককে ‘পাঠান’ সিনেমার প্রযোজক ও পরিবেশকেরা রীতিমত হুমকি দিচ্ছেন যে সিনেমা হলের সব শোয়ে শুধুমাত্র হিন্দি সিনেমাই চালাতে হবে। তবেই তাঁরা পাঠান দেবেন, না হলে নয়। সেই সূত্রেই সামনে এসেছে হুগলি জেলার কোন্নগরের(Konnagar) একটি সিনেমা হলের ঘটনা যা নিয়ে এবার সরব হয়েছে বাংলা সিনেমার অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য(Saheb Bhattacharya)। কার্যত বলিউডের এই দাদাগিরির বিরুদ্ধে রীতিমত রুখে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তিনি।
কী বলেছেন সাহেব? সাহেবের দাবি, দেশজুড়ে প্রায় ৭ হাজার সিনেমা হলে হিন্দি সিনেমা চলে। সেখানে বাংলা সিনেমা চলে মেরেকেটে ৩০টা হলে। এবার সেখানে যদি ওই ৩০টা সিনেমা হলের মধ্যে ২৫টা সিনেমা হলেই যদি বাংলা সিনেমা জোর করে নামিয়ে দিয়ে হিন্দি সিনেমা দেখানো হয় তাহলে বাংলা সিনেমা বাঁচবে কী করে? কোন্নগরের একটা সিনেমা হলে ৩টে শো হয়। সেখানে ২টো শোতে একটা বাংলা সিনেমা চলছিল, ১টা শোয়ে হিন্দি সিনেমা চলছিল। বোম্বের বান্দ্রায় বসে সিনেমা হলের মালিককে হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৩টে শোতেই হিন্দি সিনেমা দেখাতে হবে। নাহলে পাঠান দেব না। সেটাই হয়েছে। ওই সিনেমা হলে বাংলা সিনেমা দেখানো যাচ্ছে না। এটা মুখ বুজে আর মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এবার রুখে দাঁড়াতে হবে। বাঙালিরা ভদ্র, নম্র, অতিথিপ্রিয়। কিন্তু বাঙালির এইসব গুণকে কেউ যেন তাঁর দুর্বলতা ভেবে না বসে। এই দাদাগিরি আর মেনে নেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য এই বিতর্কের ঘটনায় আগেই মুখ খুলেছেন বাঙালি পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলি। তিনি জানিয়েছেন, ‘পাঠান মুক্তি পাচ্ছে। আমরা সবাই পাঠান দেখব। শাহরুখ খানের মতো স্টারের ছবি এত বছর পর মুক্তি পাচ্ছে সবাই অপেক্ষা করছে। কিন্তু বলিউডের বড় বড় প্রযোজকেরা সিঙ্গল স্ক্রিনগুলিকে শর্ত দিয়েছে, ছবি নিলে সব শো-এ তাঁদের ছবি চালাতে হবে। কিন্তু প্রত্যেকটা শো-তে যদি ওদের ছবি চলে, তাহলে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করবে পাঠান, এমন সুযোগ কেউ হাতছাড়া করবে না। তাই তাঁদের সুবিধার্থে আমাদের শর্ত মানতে হচ্ছে। তবে সমস্যা ডিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে। যাঁদের হাতে সারা দেশজুড়ে ১০ হাজারটা থিয়েটর। আমাদের হাতে মাত্র ৪০ থেকে ৫০টা থিয়েটার। এখানেও যদি আমরা ছবি দেখাতে না পারি, তবে বাংলা ছবি কোথায় গিয়ে দেখাব। সবথেকে অবাক কাণ্ড, শাহরুখ খান হয়তো নিজেও জানেন না, যে আমরা এমন ঘটনার শিকার হচ্ছি। তিনি তো আমাদের বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসডর। সেখানকার ভাষার ছবি সমস্যার মুখে।’