নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী ১৪ জুলাই ফ্রান্সে(France) পালিত হতে চলেছে বাস্তিল দিবস(Bastille Day) যা সেই দেশে সাধারণতন্ত্র দিবসের মতোই উদযাপিত হয়। এবারে সেই অনুষ্ঠানে ফরাসী সরকারের প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দিতে চলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। আগামিকালই তাঁর প্যারিসে পৌঁছে যাওয়ার কথা। ঠিক তার একদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর অস্বস্তি বাড়িয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টে জরুরি ভিত্তিতে মণিপুর(Manipur) নিয়ে আলোচনা হয়। যদিও ভারতের তরফে তা থামানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ‘বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে এই আলোচনা বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। যদিও তা পাত্তা দেয়নি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন পার্লামেন্ট(EU Parliament)।
আরও পড়ুন নন্দীগ্রাম আর শুভেন্দুর নয়, লিড তৃণমূলের
ঘটনা হচ্ছে, গত ২ মাস ধরে মণিপুর জ্বলছে। শত শত মানুষ মারা গিয়েছেন। লাখো মানুষ ঘরছাড়া, সর্বস্বান্ত হয়ে জঙ্গলে, রাস্তাঘাটে চূড়ান্ত নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বেঁচে থাকার লড়াই করছেন। অথচ এই বিষয়টি নিয়ে একবারও মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা বহু বার মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি চেয়েছে। কিন্তু মোদি নীরবই থেকে গিয়েছেন। দেশের একটি রাজ্য কার্যত জ্বলছে। নিত্যদিন সেখানে মন্দির, গীর্জায়, বাজারে, মলে, গ্রামে, শহরে হামলার ঘটনা ঘটছে। পুলিশের দেখা মিলছে না। রাস্তায় রাস্তায় সেনাবাহিনী, কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকার গোটা বিষয়টি নিয়ে এমন একটা মৌনব্রত পালন করে চলেছে যা দেখে মনে হবে যেন কিছুই হয়নি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তবুও একবারের জন্য মণিপুর গিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী! তিনি না একদিনের জন্যও মণিপুর নিয়ে একটা শব্দ খরচ করেছেন না একদিনেও সেখানে গিয়েছেন। তিনি বিদেশ ভ্রমণেই ব্যস্ত থেকেছেন।
আরও পড়ুন উত্তরের ৮ লোকসভা কেন্দ্রেই জমিহারা বিজেপি
যদিও এখন দেখা যাচ্ছে, মোদি সরকার মণিপুর নিয়ে যতই সব কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মণপুর নিয়ে আলোচনা চেপে রাখতে তাঁরা পাচ্ছেন না। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশে আলোচনা নিশ্চিত ভাবে ভারতের পক্ষে অস্বস্তিদায়ক। কিন্তু এই পরিস্থিতি তৈরিই হত না যদি না মোদি সরকার তা প্রাণপণ ভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করত। এদিন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টের আলোচনায় কার্যত ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি। যেভাবে মণিপুরে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, সেখানে যেভাবে মানুষের মৌলিক অধিকার খর্বিত হয়েছে, মিডিয়া ও গণমাধ্যমকে যেভাবে কোনঠাসা করা হয়েছে, একের পর এক চার্চ, স্কুল, মন্দির, বাজার, গৃহস্থের বাড়ি, গ্রামে হামলা চালানো হয়েছে, লুঠতরাজ করা হয়েছে, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্ট।