নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০২১ সালে ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলনের পর ভারতীয় রেলের জন্য বড় ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসকে স্মরণীয় রেখে দেশজুড়ে ৭৫টি বন্দে ভারত ট্রেন চালু হবে। যার ফলে দেশের উন্নয়নের জন্য গ্রাম-শহর যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে হবে। যদিও বাস্তবে দেশে এখন মাত্র ২টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলছে। একটি দিল্লি ও বারাণসীর মধ্যে, অন্যটি দিল্লি ও কাটরার মধ্যে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। এই অমিলকে কার্যত চূড়ান্ত ধাপ্পাবাজির জায়গায় এদিন নিয়ে চলে গেলেন দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কেননা এদিন দেশের ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে দেশে ৪০০টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালাবে কেন্দ্র সরকার।
মজার কথা সেই ট্রেন কোথায় তৈরি হবে, কোথা থেকে তার অর্থ সংস্থান হবে, কোন কোন রুটে তা চলাচল করবে আর তার ভাড়াই বা কত হবে তা নিয়ে বাজেটে একটিও শব্দ খরচ করেননি অর্থমন্ত্রী। আর এই কারনেই আমজনতা এখন সাফ জানাচ্ছেন, মোদি যেমন দেশবাসীকে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিলেন সবার অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, এই বন্দে ভারত ঘোষণাও সেই রকমই। অর্থাৎ প্রতিশ্রুতির চূড়ান্ত ধাপ্পাবাজি। ৩ বছরে ৪০০টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর অর্থ বছরে ১৩৩টির মতো নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা। মাসের হিসাবে প্রতি মাসে প্রায় ১১টি করে ট্রেন চালু করা। দেশের কোনও রেলের কারখানাতেই এত দ্রুত হারে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তৈরি করার মতো ক্ষমতা নেই। তাহলে নির্মলা কিসের ওপর ভিত্তি করে এই গাঁজাখুরি গপ্পো শোনালেন সেটাই এখন আমজনতার সব থেকে বড় প্রশ্ন।
এবারের বাজেটকে ঘিরে বঙ্গবাসী তাকিয়ে ছিল রাজ্যের রেল প্রকল্প ও কলকাতার মেট্রো প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র সরকার ঠিক কতটা বরাদ্দ করছে তা দেখার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই প্রসঙ্গে নির্মলা সীতারমণ এদিন কোনও শব্দ খরচ করেননি। তাতেই বোঝা যাচ্ছে কলকাতার মেট্রো প্রকল্পগুলির জন্য এবারে মোদি সরকার ছিঁটেফোঁটা বরাদ্দ করেনি। যার জেরে ধাক্কা খাবে জোকা-ধর্মতলা, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর, বারাসত-বিমানবন্দর এই ৩টি মেট্রো প্রকল্প। একই সঙ্গে রাজ্যের ঘোষিত রেল প্রকল্পগুলির জন্যও সিকি পয়সা বরাদ্দ করেননি নির্মলা। কার্যত বাজেটে সব দিক দিয়েই বঞ্চিত করা হয়েছে বাংলাকে। আর তেতেই ক্ষুব্ধ বঙ্গবাসী।