নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের প্রতি ভালবাসা নয়, বেগার খাটাও নয়। শুধুই পয়সা কামানো। ভোট এসেছে, তাই পয়সা কামিয়ে নাও। দলের হয়ে প্রচারে নামলে দিনপ্রতি মাথাপিছু দিতে হবে ৫০০টাকা। টাকা না দিলে দলের হয়ে প্রচার তো দূর কী বাত, মুখের দেখাও মিলবে না – এমনটাই দাবি বিজেপি কর্মীদের। আর এই বিজেপি কর্মীদের কাঁধেই ভর দিয়ে কিনা বাংলা দখলের হাঁক দিয়েছিলেন মোদি-শাহ-নাড্ডারা। এবার কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে সেই বিজেপি কর্মীরাই একাধিক ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থীদের মুখের ওপর জানিয়ে দিয়েছেন, ‘মাল ছাড়ুন, প্রচার করুন।’ মানে প্রচারে বিজেপি কর্মীদের পাশে পেতে হলে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করার কথা বলেছেন তাঁরা। আর সেখানেই বিজেপি প্রার্থী গোপা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দলের কর্মীরা তাঁকে জানিয়েছেন, প্রচারে নামাতে হলে দিনপ্রতি মাথাপিছু দিতে হবে ৫০০ করে টাকা। ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা না দিলে বিজেপি কর্মীরা প্রচারে নামবেন না। এই একই ঘটনা আরও বেশ কিছু বিজেপি প্রার্থীদের সঙ্গে ঘটেছে বলে বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
দলের হয়ে প্রচার করতে মুখিয়ে থাকেন দলেরই কর্মীরা। কারন দলকে তাঁরা ভালবাসেন। দলের জন্য জীবন দিতেও তাঁরা পিছুপা হন না। তা সে তাঁরা লাল, সবুজ, হলুদ, নীল যে দলেরই কর্মী হন না কেন। কার্যত সব কাজটাই চলে একটা টিমওয়ার্কের মাধ্যমে। কিন্তু সেই বাস্তবতার চরম বিপররীত ছবি বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তথা দলের হয়ে প্রচার করার জন্য বিজেপির কর্মীরাই প্রকাশ্যেই টাকার দাবি জানাচ্ছেন। আর তার জেরে এখন শহরজুড়ে তো বটেই রাজ্যজুড়েই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে বিজেপি কর্মীদের এই টাকার দাবি যিনি স্বীকার করে নিয়েছেন সেই ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী গোপা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ওই সব বিজেপি কর্মীদের হয়ে কিছুটা সাফাই গেয়েছেন।
গোপা জানিয়েছেন, ‘ভোট মানেই রোজগার ও উপার্জনের একটা জায়গা। এই সুযোগে প্রত্যেকে চায় কিছু কামিয়ে নিতে। ওদের আর দোষ কোথায়? পার্টি থেকে তো আর কাউকে মাস মাইনে দেওয়া হয় না, তাই ভোটের সময় কর্মী-সমর্থকরা কিছু আশা করে। হাত খরচ হিসাবে তারা এই টাকাটা চাইছে। আমার সঙ্গে খুব অল্প কয়েকজন কর্মী-সমর্থক রয়েছেন। তাই ওরা যাদের আনছে, তাদের জন্য দিনে মাথাপিছু ৫০০ টাকা করে নগদ চাইছে। যদিও আমি এখনও পর্যন্ত কাউকে কোনও টাকা দিইনি। আমার কাছে টাকা নেই। আর বাইরে থেকে লোক আনলে তাদেরকে তো টাকা দিতেই হবে। তবে আমি টাকা দেবো কিনা, সেটা ভেবে দেখব। ’ কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে হাতখরচের জন্য মাথাপিছু প্রতিদিন ৫০০টাকা লাগবে! এটা কী সত্যিই হাতখরচ নাকি কামিয়ে নেওয়ার পন্থা।