নিজস্ব প্রতিনিধি: দুয়ারে কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন(General Election 2024)। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের(ECI) তরফে সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি কার্যত তুঙ্গে উঠেছে। আসন সংখ্যার বিচারে দেশের মধ্যে বাংলার(Bengal) তৃতীয় বৃহত্তম যেখানে সব থেকে বেশি লোকসভা আসন রয়েছে। এবার সেই রাজ্যেই এসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। এদিন সকাল থেকেই তাঁরা রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। বেলার দিকে তাঁরা বৈঠক করবেন রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে। ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে দলগুলির কী কী করণীয়, প্রচারের সময়ে কোন কোন কাজ তারা করতে পারবে না, তারকা প্রচারকদের ক্ষেত্রে কী নিয়ম রয়েছে, আদর্শ আচরণবিধি অনুসারে সে সব বুঝিয়ে দেওয়া হয় এদিনের বৈঠকে। তৃণমূলের(TMC) তরফে এদিন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন সুব্রত বক্সি, ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আর কেন্দ্রীয় বাহিনী(Central Force) গ্রামগঞ্জে ঢুকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
কল্যাণের দাবি, তাঁরা কমিশনের কাছে আর্জি রেখেছেন বাংলায় ১ দফাতেই ভোট করতে। যদি দেশের অনান্য রাজ্যে ১ দফায় ভোট হয় তাহলে বাংলায় তা হতে বাধা কোথায়। কমিশন যেন বিজেপির সুবিধার্থে কোনও সিদ্ধান্ত না নেয়। কমিশনের আচরণ ও সিদ্ধান্ত যেন নিরপেক্ষ থাকে। তাবে তাঁরা সব থেকে বেশি জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর। কেননা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতেই উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচিতে ৫ জন নিরীহ ভোটার প্রাণ হারিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী নুথের মধ্যে গুলি চালানোয় সেখানে ভোট দিতে আসা ওই ৫জন মারা যান যাদের সকলেই ছিলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। শুধু তাই নয়, সেই ঘটনায় কার নির্দেশে আর ঠিক কেন গুলি চালানো হয়েছিল তা আজও অন্ধকারে রয়ে গিয়েছে। এমনকি এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ ধরাই পড়েনি। এর পাশাপাশি একুশের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে গ্রামে গ্রামে বেছে বেছে তৃণমূল সমর্থক পরিবার ও ভোটারদের হুমকি-ধমকি দেওয়া, বুথে যেতে না দেওয়া, মহিলাদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল বিস্তর। এমনকি বুথের মধ্যে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের ভয় দেখানো ও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোট দিতে বলারও অভিযোগ উঠেছিল।
সেই সব বিষয়ে এদিন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে মূল অভিযোগ যেটা সেটা হল – শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন। কোন জেলার কোন এলাকায় বাহিনী টহল দেবে, কোথায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে সেই সব কিছুই ঠিক করে দিচ্ছে। একুশের ভোটের মতোই ফের গ্রামে গ্রামে গিয়ে তৃণমূল সমর্থক পরিবার ও ভোটারদের ফের হুমকি ধমকি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। আর এই সব কিছুই হচ্ছে শুভেন্দুর নির্দেশে। যদিও কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। কমিশনের তরফে একুশের ভোটে শীতলকুচির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করা হয়েছে। তবে বাংলায় যে ১ দফায় ভোট হবে না সেটা নিশ্চিত। সূত্রে জানা গিয়েছে ৫ থেকে ৬ দফায় ভোট হতে পারে বাংলায়। অন্তত খুন কম করেও ৩ দফায় ভোট হবে।