নিজস্ব প্রতিনিধি: জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানে তীব্রস্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজানো নিয়ে শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ কলকাতার(Kolkata) চিংড়িঘাটা(Chingrighata) এলাকার শান্তিনগরে(Shantinagar) বচসা বেঁধেছিল স্থানীয় বাসিন্দা তথা দুষ্কৃতী বিট্টু সর্দারের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই বচসা থামাতে গিয়ে বিট্টুর রোষের মুখ পড়েন এলাকারই অপর এক বাসিন্দা সাহেব আলি সর্দার। বিট্টু শুধু তাঁকে বেধড়ক মারধরই করেনি, তাঁর গলায় কাঁচিও ঢুকিয়ে দেয়। কাঁচির কোপে আরও এক জনের আঘাত লাগে। দুইজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকেরা সাহেবকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেই ঘটনার রোষে রবিবার সকালে চিংড়িঘাটা এলাকাতেই ক্ষুব্ধ জনতার হাতে ধরা পড়ে যায় বিট্টু। তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই ঘটনা নিয়েই এবার কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু(Sujit Basu)।
চিংড়িঘাটায় যুবক খুনের(Murder) ঘটনায় এদিন কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। বিশেষ করে শান্তিনগরের বাসন্তী কলোনিতে(Basanti Colony) বিট্টুর বাড়িও ভাঙচুর করেন ক্ষিপ্ত জনতা। ঘটনার খবর পেয়েই বাসন্তী কলোনিতে যান দমকল মন্ত্রী। স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন তিনি। স্থানীয়ের দাবি, বিনা কারণে নিরাপরাধ একটা ছেলের জীবন চলে গেল। বিট্টুর ফাঁসি চাই। অনেক চেষ্টা করে সুজিত বিক্ষোভকারীদের শান্ত করেন। মন্ত্রীকে কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের পরিবারের লোকজন। পরে সুজিত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কার্যত কড়া বার্তা দেন। তিনি সাফ জানান, অপরাধীকে অপরাধীর মতোই বিচার করতে হবে। এদিনের ঘটনায় সব থেকে বেশি অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে পুলিশকেই। কেননা শনিবারের মাঝরাতে খুনের ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছিল বিট্টু। পুলিশ তাকে খুঁজেই পায়নি। অথচ এদিন সকালেই সে ফের বহাল তবিয়তে পুলিশের সামনে দিয়েই ঘোরাফেরা শুরু করেছিল। পুলিশ তখনও তাকে ধরেনি। পরে উন্মত্ত জনতার মারধরের সময় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এদিন সুজিত সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘এমন নৃশংস ঘটনা বাসন্তী কলোনিতে এর আগে কোনওদিন হয়নি। এই প্রথম ঘটল। এতগুলো পুজো হয়েছে, ইদ হয়েছে। কিছু হয়নি। শেষবেলাতে যা হল তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করেই এমন ঘটনা। কিন্তু যে নৃশংস ভাবে ছেলেটিকে খুন করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয়। সকালেই সিপির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁকে বলেছি যে কোনও প্রকারে ছেলেটাকে ধরতে হবে। ক্রিমিন্যালকে ক্রিমিন্যাল হিসেবে ট্রিট করতে হবে। এতবড় বাসন্তী কলোনি, এখানে এত মানুষ বাস করে। শান্তিপূর্ণ এলাকা। একটা পরিবারের একমাত্র ছেলে। তার মায়ের কোল খালি হয়ে গেল। পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে আমরা থাকব। আসামী ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে। তার যাতে চরম শাস্তি হয় সেটা পুলিসকে আমরা বলব। সকালেই আমি এলাকায় ফোন করে বলেছি, আপনারা শান্ত থাকুন। আমি আসব। অভিযুক্তের পরিবারটিকেও নিয়ে এলাকায় আপত্তি রয়েছে। এনিয়ে পুলিশকে যা বলার বলব। আমি শুনেছি, অভিযুক্ত ড্রাগ অ্যাডিকটেড। জেল থেকেও ছাড়া পেয়ছিল কিছুদিন আগে। একটা লোকের জন্যা গোটা পাড়ার সমস্যা হতে দেওয়া যায় না।’