নিজস্ব প্রতিনিধি: বাড়ির সমস্ত দেওয়ালে ফাটল। যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। চিন্তায় দিশেহারা বৌ বাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দারা। ঘর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ঘর ছাড়তে শুরু করেছে বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী। উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই একাধিক বাড়িতে দেখা গিয়েছিল ফাটল। বাদ যায়নি দেওয়াল এমনকি ছাদ! বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে যে কোনও সময়।
প্রায় আড়াই বছর আগে ঘটেছিল এমনই এক দুর্ঘটনা। যে কোনও প্রকারে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন বাসিন্দারা। একই জায়গার ঘটনা। সময়টা ২০১৯ সালের অগাস্ট। সেই সিঁদুরে মেঘেই ভীত বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা। বাড়ি যেন নেমে এসেছে রাস্তাও। তাও ক্ষণিকের জন্য। তারপর কোথয় যাবে, কী করবে সব ভেবে দিশেহারা বাসিন্দারা। বাড়ি খালি করা এত কমসময়ে, মুখের কথা নয়। তবু জীবনের মায়া। ফেলে রাখা বাড়িতে কবে কে ফিরতে পারবেন, তা জানা নেই কারওরই। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন হোটেল বা আত্মীয় বাড়িতে। তবে অনেকেই দুশ্চিন্তায় কোথায় যাবেন, তা ভেবে।
প্রশাসনের নির্দেশ বাড়ি ছাড়ার, মেট্রো কর্তৃপক্ষ দেয়নি কিছু আশ্বাস। অথচ মেট্রোর কাজের জন্যই এই অবস্থা। কাজ করার সময় এই অবস্থা হলে মেট্রো চলাচল করলে কী হবে, তা ভেবে আরও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাসিন্দারা। অনেকেই উপায় না পেয়েও অনিশ্চয়তার মধ্যেই চরম বিপদের আশঙ্কার মধ্যেই রয়ে গিয়েছেন গাটল ধরা বাড়িতেই। খবর পেয়ে দ্রুত এলাকায় উপস্থিত হয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। তিনি বুঝিয়েছেন, বাড়ি না ছাড়লে এর পরিণতি কী হতে পারে। উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুর নিগমের মেয়র (Mayor) ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক (MLA) নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, পুলিশ কমিশনার প্রমুখ। এলাকার মানুষ ও ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছে প্রশাসন ও মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ঘিরে ফেলেছে এলাকা। তবু ভয়, অনিশ্চয়তা পিছু ছাড়ছে না মানুষের।
কলকাতা মেট্রোর (Metro) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজ করার সময় মেট্রোর সুড়ঙ্গতে জল ঢুকে যাওয়ার জন্যই এই বিপর্যয় ঘটেছে। যার শিকার প্রায় ১২- ১৫ টি বাড়ি। মেট্রোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কাজ করার সময় প্রায় ১১ টি জায়গা দিয়ে সুড়ঙ্গে ঢুকেছিল জল। জানানো হয়েছে, ১০ টি উৎস বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। আর কোনও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, বলেও দাবি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের। আদালত সতর্ক করার পরেও কেন ফাটল, তা নিয়ে অবশ্য চুপ মেট্রো। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ররা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কাজ। এর আগে ২০১৯ সালে মেট্রোর সুড়ঙ্গ কাটার জন্যই দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরা লেনে ধসে ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গিয়েছিল ৭৪ টি বাড়ি। বড়সড় দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল প্রায় ৬৭৪ জন বাসিন্দাকে।