নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের(General Election 2024) মুখে বাংলার শাসক দলে(TMC) কী কুরুক্ষেত্রে বেঁধে গেল? প্রশ্ন উঠে গিয়েছে দলেরই মুখপাত্র কুণাল ঘোষের(Kunal Ghosh) জন্য। কেননা তিনি প্রকাশ্যেই দলেরই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Sudip Banerjee) বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগে চলেছেন। শনি সকালে তিনি ট্যুইট করে সুদীপের বিরুদ্ধে যেমন বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তেমনি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। সব থেকে বড় কথা কুণাল সুদীপের বিরুদ্ধে গত ৩ দিন ধরে একের পর এক বাক্যবাণ ও অভিযোগ করে গেলেও সুদীপ কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। এমনকি কুণালকে থামাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেও সেভাবে উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, কুণালকে নিয়ে সুদীপ নাকি দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে কুণাল দলের পদ থেকে নিজে থেকজেই সরে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সেই দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে তৃণমূল নেতৃত্ব কতখানি তাঁকে বাগে আনতে পারবে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
শনি সকালে কুণাল একটি বিস্ফোরক ট্যুইট করেছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, সুদীপ ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে থাকাকালীন কে হাসপাতালের বিল মিটিয়েছেন, তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ সুদীপ নাকি কয়লা দুর্নীতিতে যুক্ত। তিনি লিখেছেন, ‘সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং তাঁর হয়ে ভুবনেশ্বর অ্যাপোলো হাসপাতালের বিল মেটানোর নথি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তিনি যখন বন্দি ছিলেন, তাঁকে বড় অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছিল, না কি তাঁর হয়ে হাসপাতালের বিল কেউ মিটিয়ে দিয়েছিলেন, তদন্ত করতে দেখতে হবে। যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে কয়লা ‘দুর্নীতি’র(Coal Scam) সঙ্গে ওই টাকার যোগ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তদন্তের স্বার্থে সুদীপকে গ্রেফতার করা উচিত। যদি কেন্দ্রীয় সংস্থা এটি এড়িয়ে যায়, আমি আদালতের দ্বারস্থ হব।’ কার্যত সুদীপের বিরুদ্ধে এই ধরনের বিস্ফোরক অভিযোগ কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলকেও করতে দেখা যায়নি। সেখানে কুণালের এই ট্যুইট রাজ্য রাজনীতিতে শুধু যে শোরগোল ফেলে দিয়েছে তাই নয়, বিজেপির হাতে মক্ষোম অস্ত্রও তুলে দিয়েছে।
এর আগেও শুক্রবার সন্ধ্যায় সুদীপের নাম করে তোপ দেগেছিলেন কুণাল। বলেছিলেন, সুদীপ ‘বিজেপির লোক’। তাঁর পরিভাষায়, ‘উত্তর কলকাতায় এবার পদ্মফুল বনাম পদ্মফুলের লড়াই হবে। সুদীপবাবু দাঁড়াবেন জোড়াফুলের হয়ে। কিন্তু আসলে তিনি পদ্মফুলের লোক। উত্তর কলকাতায় যা হচ্ছে, তা দলের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। একে তো কোনও জেলা দফতর নেই। ক্যালকাটা বয়েজ় স্কুলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ঘর দখল করে অফিস চালাচ্ছেন। ওঁকে নাকি কোন মিশনারিজ় অনুমতি দিয়েছে। কী করে একটি স্কুলে রাজনীতির আখড়া চলতে পারে? মোদী বাংলার মাটিতে একরাশ কুৎসা করে গেলেন। যুক্তিতে তাঁকে ধুয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু ঘটনা হল, তাঁর কড়া সমালোচনার মূল দায়িত্ব যাঁদের, দু’টি আলাদা বিরোধী দলের লোকসভার দলনেতারা তো প্রধানমন্ত্রীরই লোক। এদের সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ। এই দু’জনকে দু’ভাবে ব্যবহার করেন মোদী। এক জনকে রোজ়ভ্যালি থেকে বাঁচিয়ে গলায় বকলস পরিয়ে রেখেছেন।’