নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশের(Bangladesh) চট্টগ্রাম থেকে কলকাতায়(Kolkata) পণ্য নিয়ে এসেছিল বাংলাদেশি জাহাজ মেরিন ট্রাস্ট-০১। পণ্য নিয়ে আসার পথে কোনও সমস্যা তৈরি না হলেও বিপদ ঘনিয়ে আসে জাহাজটি কলকাতা বন্দরের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে। জাহাজটি ২০ মার্চ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম(Chitgnao) থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। গত ২৩ মার্চ তা কলকাতা বন্দরে এসে পৌঁছায়। সেইদিনই জাহাজটির পণ্য আনলোড করে নতুন করে অন্য পণ্য লোড করে চট্টগ্রামের পথে রওয়ানা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফিরতি পণ্য লোডিংয়ের সময় কন্টেনারের বাড়তি ওজনের কারণে বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একপাশে কাত হয়ে ডুবতে শুরু করে জাহাজটি। সেই সময় জাহাজ থেকে দ্রুত বেশ কিছু ভারি কন্টেনার সরিয়ে পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার আগেই জাহাজটিকে রক্ষা করা হয়। তবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাহাজটি পুনরায় বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে বন্দরেই আটকে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি জাহাজ এবং তার নাবিকরা। সেই থেকে কলকাতায় আটকে রয়েছেন বাংলাদেশি জাহাজ মেরিন ট্রাস্ট-০১ এর ১৫জন নাবিক।
বর্তমানে এই ১৫জন নাবিক রয়েছেন কলকাতার বন্দর সংলগ্ন মেরিন ক্লাবে(Marine Club)। তাঁদের অভিযোগ, জাহাজডুবির ঘটনার পরে মেরিন ট্রাস্ট কোম্পানির পশ্চিমবঙ্গের লোকাল এজেন্ট বেঙ্গল শিপিং লিমিটেড তাঁদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছে। তার জেরে ওই নাবিকেরা এটা প্রমাণ করতে পারছেন না যে তাঁরা বৈধ পথে বৈধ ভাবেই ভারতে প্রবেশ করেছেন। আর সেই প্রমাণ না করতে পারার জন্য তাঁদের এখন কলকাতা পুলিশ(Police) কর্তৃপক্ষ কলকাতার বন্দর সংলগ্ন মেরিন ক্লাবে আটকে রেখে দিয়েছে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্থ জাহাজের মালিক কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ মেরিন ট্রাস্ট-০১ এর মালিক কর্তৃপক্ষ এই ১৫জন নাবিককে দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়ার কোনও চেষ্টাই এই ১ মাসে করেনি বলেই এখন অভিযোগ করছেন ওই আটকে পড়া নাবিকেরা।
সম্প্রতি মেরিন ক্লাবে বন্দিদশায় জাহাজটির চিফ ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান তার বাকি সহকর্মীদের নিয়ে একসঙ্গে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘গতমাসে কলকাতা পোর্টে লোডিং অবস্থায় বাংলাদেশি একটি জাহাজ ডুবে যায়। আমি ডুবে যাওয়া ওই জাহাজে চাকরি করি। গত একমাস যাবৎ আমরা ১৫ জন বাংলাদেশি নাবিক, কলকাতা মেরিন ক্লাবে আটকে আছি। আমাদের দেশে ফেরা অনিশ্চিত। কোম্পানিও দেশে নিচ্ছে না, আবার কলকাতা থেকেও ছাড়ছে না। এতদিন আমাদের কার্গো এজেন্ট আমাদের খাবার দিচ্ছিল। কিন্তু কাল থেকে হয়তো তাঁরা আর আমাদের খাবারও দিবে না। এমন হুমকিও তাঁরা দিয়েছে।’ এর পাশাপাশি তাঁরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নৌ পরিবহণমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আমরা এক কাপড়ে এখানে আছি, আমাদের দেশে নিয়ে যান, আমাদের জীবন হুমকির মুখে, আমাদের বাঁচান আপনারা।’