নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় নির্বাচন কমিশনের(ECI) কাছে অভিযোগ গিয়েছে যে, এ রাজ্যে ভোটের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মীদের(State Government Employees) যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য(Personal Information) ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। ভোটের ডিউটিতে(Election Duty) যাওয়া সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর বাড়ির ঠিকানা থেকে শুরু করে ফোন নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার নম্বর পর্যন্ত ফাঁস হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে ভোটকর্মীদের গোপনীয়তাই শুধু যে লঙ্ঘন হচ্ছে তা নয়, এমনকী কোন পোলিং পার্টির সঙ্গে সেই সরকারি কর্মীকে ডিউটিতে যেতে হবে, কোন ব্লকে ওই ভোটকর্মীকে কর্তব্য পালন করতে হবে, সেই সংক্রান্ত তথ্যগুলিও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির হাতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এর জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ভোটকর্মীদের পরিবারের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, ভোটের ডিউটির প্রশিক্ষণে হাজিরা না দেওয়ায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রায় ১৫০০জন সরকারি কর্মীকে শোকজ(Show Cause) করেছে কমিশন।
এ রাজ্যের সরকারি কর্মীরা দাবি করছেন, তাঁরা তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার বিষয়ে কমিশনের কাছে এর আগে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তবে তাতে কোনও লাভ হয়নি। এদিকে ভোটের ডিউটিতে যাওয়া সরকারি কর্মী এবং শিক্ষকদের বক্তব্য, ভোটের ডিউটির চিঠি খামবন্দি অবস্থায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে আসছে। তাহলে কীভাবে সেই তথ্য বাইরে চলে যাচ্ছে? এই তথ্য ফাঁস নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানানোর পর তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সেই আশ্বাসে কাজ হয়নি। এই আবহে সরকারি কর্মীদের দাবি, তাঁদের আগে যেখানে ভোটের দায়িত্বে পাঠানোর কথা ছিল, সেই স্থান পরিবর্তন করতে হবে। এদিকে ডিউটির স্থান পরিবর্তন না করা হলে নির্বাচন কমিশনের অফিসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তার মাঝেই সামনে এসেছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রথম দফার প্রশিক্ষণে যাঁদের ডাকা হয়েছিল, তাঁদের সকলে হাজির হননি। এই সংখ্যা দেড় হাজারের কিছু বেশি। এদেরই এখন শোকজ করা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে এদের কাছ থেকে সন্তোষজনক উত্তর না পেলে নির্বাচন কমিশন তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় মোট পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে, রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি। জেলায় মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৮,৬৪৭টি। তারমধ্যে ১,২৩৩টি মহিলা পরিচালিত। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো প্রতিটি কেন্দ্রে নিয়োগ করা হবে ৪জন করে ভোটকর্মী। তাই রিজার্ভ ধরে ৩৬ হাজার ভোটকর্মী জোগাড় করা হয়েছে। ওই কর্মীদের প্রথম দফার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে হাজার দেড়েক কর্মী এই প্রশিক্ষণে আসেননি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকারি নিয়ম মেনে ভোটকর্মীদের আগেই মেসেজ দিয়ে প্রশিক্ষণের স্থান ও সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই জেলার ৫টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ভোটকর্মী হিসেবে কাজের অনীহা সব থেকে বেশি বসিরহাটে। রাজ্যের অন্যান্য জেলায় ভোটকর্মীদের গরহাজিরার সংখ্যা এই জেলার তুলনায় অনেক বেশি।