নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়(Swapan Banerjee) ওরফে বাবুন হুট করেই হাওড়া পুরনিগম এলেকার ভোটার হয়েছেন। আর তার জেরে জল্পনা ছড়িয়েছে, বাবুন হয়তো হাওড়া পুরনিগমের(Howrah Municipal Corporation) আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের(TMC) প্রার্থী হবেন। সম্ভবত সেক্ষেত্রে তাঁর হাতেই উঠতে চলেছে হাওড়া পুরনিগমের দায়িত্ব। অর্থাৎ তিনিই হতে চলেছেন সেখানকার মেয়র। আর এই জল্পনার জেরেই হাওড়ার মানুষ দুটি প্রশ্ন তুলেছেন। এক, বাবুন তো নয় হাওড়ার(Howrah) ভোটার হলেন, কিন্তু হাওড়ার ভোটটা কবে হবে? দ্বিতীয় যে প্রশ্ন উঠে আসছে তা হল, হাওড়া শহরে তৃণমূলের এমন কেউ কী নেই যিনি এই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন? দলের নেতৃত্ব কী হাওড়া শহরের নেতাদের আর ছিঁটেফোঁটা বিশ্বাস করেন না যে বাইরে থেকে মেয়রপদপ্রার্থী আমদানি করতে হচ্ছে? যদিও তৃণমূলের তরফে এই দুই প্রশ্নেরই কোনও উত্তর মেলেনি।
হাওড়া পুরনিগমের ভোট আটকে আছে দীর্ঘদিন। ২০১৩ সালে এই পুরনিগমে শেষবারের মতো নির্বাচন হয়েছিল। ২০১৫ সালে রাজ্য সরকার হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে বালি(Bally) পুরসভাকে মিশিয়ে দেয়। সেই সময় বালি পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা ছিল ৩৫। কিন্তু হাওড়ার সঙ্গে বালির সংযুক্তির ফলে বালিতে ওয়ার্ড সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৬ যা যুক্ত হয় হাওড়া পুরনিগমের ৫০টি ওয়ার্ডের সঙ্গে। ২০১৫ সালে ওই ১৬টি ওয়ার্ডে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে হাওড়া পুরনিগমের ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন এখনও হয়ে ওঠেনি। রাজ্য সরকার ২০১৮ সালে ভোট না করিয়ে হাওড়া পুরনিগমে প্রশাসক বসিয়ে দেয়। যা নিয়ে সেই সময়ে বিরোধীরা সরব হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি রাজ্য সরকার। ২০২১ সালে রাজ্য সরকার আবারও বালিকে হাওড়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক পুরসভা হিসাবে গড়ে তোলার বিল রাজ্য বিধানসভায় পাশ করায়। কিন্তু সেই বিলে এখনও সন্মতি দেননি রাজ্যপাল। ফলে ওই বিল পাশ না হওয়ায় হাওড়া পুরনিগমের ৫০টি ও পুনর্গঠিত বালি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডে ভোট করাতে পারছে না রাজ্য সরকার।
এই অবস্থায় স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার ভবানীপুর এলাকা থেকে তাঁর ভোটার হিসাবে তাঁর নাম হাওড়া পুরনিগম এলাকায় সরিয়ে আনাতেই যাবতীয় প্রশ্নের উৎস। এই ঘটনায় বাবুন জানিয়েছেন, ‘হাওড়ার মানুষ আমাকে ভালবাসেন। তাই আমি হাওড়ার ভোটার হয়েছি। এর মধ্যে অন্য কোনও মানে খুঁজতে যাবেন না। দিদি যেখানে বলবেন সেখানে কাজ করব। হাওড়ায় চাকরি করেছি, হাওড়াকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসি, হাওড়াবাসীর পাশে থাকতে চাই। আমি দলের কর্মী, দলের কাছে আবেদন করব। যদি প্রার্থী করে তবে অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মসূচি সামনে রেখেই লড়াই করব।’ বাবুনের কথায় সেই মেয়র পদের প্রশ্ন এসে যাওয়ায় তাই এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন হাওড়ায় যে সব নেতারা রয়েছেন তাঁরা কী নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে উঠতে পারছন না? নাকি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দল হারতে পারে সেই আশঙ্কা থেকে বাবুনকে সামনে রেখে ঘর গোছাতে চাইছে শাসক দল সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। অনেকের এবার এটাও ধারনা যে বাবুনকে মেয়র হিসাবে তুলে ধরার পাশাপাশি ২০২৪-এ হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী করাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাদ পরবেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হাওড়ায় ভোটটা কবে হবে!