নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলা বদলেছে। কিন্তু বদলায়নি কেন্দ্রের মনোভাব। আর তাই ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের(Bengal Global Business Summit) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রকে বিঁধতে ছাড়লেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। নিজের ভাষণের একদম শেষ দিকে তিনি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে(Jagdeep Dhankar) অনুরোধ করে বললেন, ‘রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ, অনুগ্রহ করে কেন্দ্রকে বলুন, শিল্পপতিদের পিছনে যেন সিবিআই(CBI)-ইডি(ED) লেলিয়ে দিয়ে হেনস্থা না করা হয়।’ আর তাঁর সেই অনুরোধকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানালেন সম্মেলনে হাজির হওয়া শিল্পপতিরা।
নিউটাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে এদিন থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। সেখানেই এদিন নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষায় বাংলা দেশের মধ্যে সেরা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সবাই বিনামূল্য চিকিৎসা পান। একশো দিনের কাজে আমরা দেশের সেরা। গ্রামীণ আবাসন নির্মাণে আমরা এক নম্বরে। আমরা ধান উৎপাদন থেকে ই-টেন্ডারে এক নম্বরে। অতিমারি পরিস্থিতিতেও বাংলার জিডিপি বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। রাজ্যের রাজস্ব আয় ৪ গুণ বেড়েছে। বাংলার সরকার ক্রমশ এগোচ্ছে। বাংলার সূর্যোদয় হচ্ছে। প্রতি সকালে বাংলার নতুন উদয় হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যার সরকার কোভিড পরিস্থিতি কাটিয়ে ফের শিল্প এবং বাণিজ্যে মন দিয়েছে। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেছে। দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির প্রবেশ দ্বার বাংলা। এ খানে ২০০টিরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক রয়েছে। বাংলার বিনিয়োগকারীরা মনে রাখুন আপনারা দেশের অন্য রাজ্যে নয় পশ্চিমবঙ্গে আসছেন। এখানে আপনারা আমাদের পরিবারের সদস্য হবেন। তাই বাংলাকে নিজের ঘর ভাবুন। নিজের উপর আস্থা রাখুন। বিনিয়োগ করুন। বাংলায় একটি কর্মদিবসও নষ্ট হয় না, আপনারা নিশ্চিন্তে আসুন।’
এদিন সম্মেলনের শুরুতে নিজ বক্তব্য রাখতে উঠে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘বাংলার উচিত রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে, উন্নয়নের কথা ভেবে কেন্দ্রের সঙ্গে মিলে কাজ করা।’ মনে করা করা হচ্ছে মমতা তাঁর ভাষণের শেষে যে সিবিআই ইডির প্রসঙ্গ টেনেছেন তা সেই পরামর্শেরই পাল্টা পরামর্শ। এদিন নিজ বক্তব্যের একদম শেষ দিকে মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সব রকম সাহায্য আমরাও পেতে চাই। তবে শিল্পপতিদের তরফে রাজ্যপালের কাছেও আমার একটি অনুরোধ আছে। অনুরোধ এই যে, শিল্পপতিদের যেন কেন্দ্রীয় সংস্থা মারফৎ কোনওরকম হেনস্তা না করা হয়। রাজ্যপালও যেন বিষয়টি কেন্দ্রের কানে পৌঁছে দেন।’ এদিন সম্মেলনে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী গত বছরই দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিলেন। তবে এদিন সম্মেলনে যোগ দেননি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মমতা তাঁর অনুপস্থিতিতেই তাঁকে বিঁধলেন শিল্পপতি ও রাজ্যপালের সামনেই।