এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

লরেটোর সিস্টার সিরিলের প্রয়াণে শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি: এক আধা বছর নয়। ৬৭ বছর আগে কলকাতায়(Kolkata) পা রেখেছিলেন তিনি। জীবনের শেষ নিশ্বাসটিও তিনি নিয়েছেন এই শহরের বুকেই। প্রাণ ভরে ভালবেসেছেন এই শহরকে। ভালবেসেছেন এই শহরের মানুষদের। ভালবেসেছেন অনাথ শিশুদের। সারা জীবন ধরে তিনি কাজ করে গিয়েছেন গরীব মানুষদের জন্য। পথশিশুদের পড়াশোনার জন্য যথাসাধ্য ব্যবস্থাও করে গিয়েছেন। পেয়েছেন পদ্ম সম্মানও। প্রায় ৮৭ বছর বয়সে তাঁর প্রয়াণে আজ কাঁদছে কলকাতা। সেই শোকের শরিক হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও(Mamata Banerjee)। লরেটো সিস্টারস-এর সিস্টার সিরিলের(Sister Cyril) প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি টুইটে লেখেন, ‘সিস্টার সিরিলের প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি একজন প্রথিতযশা শিক্ষা সংস্কারক, সমাজ সেবক ও গরিবের বন্ধু ছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পগুলিকে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর শিশুদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অপরিমেয়।’

আরও পড়ুন Hindu Marriage Rule-এ বদল ঘটিয়ে তৎকাল বিয়ে চালু করছে রাজ্য

জন্মেছিলেন তিনি ইউরোপের বুকে। আয়ারল্যান্ডের বুকে ১৯৩৬ সালের ২১ জুলাই। সেই আয়ারল্যান্ড যেখান থেকে এই ভারত ভূমিতে পা রেখেছিলেন ভগিনী নিবেদিতেও। মাত্র উনিশ বছরে বয়সে তিনি যোগ দেন Institute of the Blessed Virgin Mary-তে যাকে বিশ্ববাসী লরেটো নামেই চেনে। ঠিক তার ১ বছর বাদে মাত্র ২০ বছর বয়সে তাঁর পা পড়ে কলকাতায়। তারপর এই শহরের অলিগলিতে, বাংলার প্রান্তে প্রান্তে জড়িয়ে গিয়েছে তাঁর জীবন। বাংলার গরীব মানুষ সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর ভালবাসায়, শিক্ষায়, সেবায়। কলকাতার বুকে শিয়ালদার লরেটো স্কুলের বর্তমান অবস্থায় এনে দাঁড় করানোর কৃতিত্ব সিস্টার সিরিলের। সেই স্কুলেই তিনি কাটিয়েছেন জীবনের ৩৩টি বছর। শহরের রাস্তায় রাস্তায় অলিগলিতে স্কুটার নিয়ে পথশিশুদের জন্য অবরহ কাজ করে যাওয়ার দৃশ্য আজও অনেকেরই মনের ফ্রেমে বন্দী হয়ে আছে। আজও শিয়ালদার লরেটো স্কুলের দেড় হাজার ছাত্রীর মধ্যে ৭২১জন মেয়ে এমন বাড়ি থেকে আসে যাদের বেতনের টাকা দেওয়া তো দূর, পরনের কাপড়টাও জোটে না, দুই বেলা পেটে অন্ন জোগানোও সেখানে বিলাসিতা। এই ব্যবস্থা সিস্টার সিরিল নিজে করে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন দেশের ১২টি রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে 1:1 Fight’র প্রস্তুতি

কলকাতার পাশাপাশি সিস্টার সিরিল কাজ করে গিয়েছেন বাংলার মানুষদের জন্যও। ‘শিক্ষালয়া প্রকল্প’র মাধ্যমে সিস্টার সিরিল সাড়ে ৩ লক্ষ শিশুকে গ্রামে গিয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই এই শিশুদের পড়ানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল ৭ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। সিস্টার সিরিল কাজ করে গিয়েছে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধেও। ইট ভাটা থেকে শুরু করে অলিগলির দোকান, বড়া রাস্তার ধারে ধাবা বা কারখানায় কাজ করা শিশুদের সেখান থেকে নিয়ে এসে নিজের কাছে রেখে তাঁদের জীবন গড়ে দেওয়ার কারিগর হয়ে উঠেছিলেন সিস্টার সিরিল। সেই ইট ভাটার শিশুশ্রমিকদের জন্য তিনি ২০০৮ সালে গড়ে তুলেছিলেন Brick Field School Project। বাংলা সহ দেশের একাধিক রাজ্যের ইট ভাটায় কাজ করা শিশু শ্রমিকদের শিক্ষাদান করা হয় এই প্রজেক্টের মাধ্যমে। তাঁর এই নিরলস কাজের জন্যই ভারত সরকার তাঁকে ২০০৭ সালে পদ্ম সম্মানে সম্মাণিত করে। সেই সম্মাণ তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম। কিন্তু থামতে তো সবাইকেই হয় একদিন না হয় একদিন। সিস্টার সিরিলও থামলেন শনি সন্ধ্যায় কলকাতার বুকে। এন্টালিতে নিজ বাস ভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে। কলকাতা তাঁকে মনে রাখবে। বাংলা তাঁকে মনে রাখবে। ভাল থাকুন সিস্টার। পারলে চেষ্টা করুন আরও একবার এই শহরে, এই বাংলার বুকে ফিরে আসতে। আপনার মতো মানুষের ভীষণ ভীষণ দরকার রয়েছে আজও, এই শহরের বুকে, এই বাংলার বুকে, এই ভারতের বুকে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

পরবর্তী দু’দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ছে, জানালেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক

১৯ মে নাগাদ আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করছে বর্ষা: আবহাওয়া দফতর

বউবাজার বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্ত খালিদের মুক্তির ওপর স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

মঙ্গলবার গঙ্গাধর মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে

‘বিজেপি বড়জোর ১৯৫টা আসন পাবে’, বনগাঁ থেকে ভবিষ্যৎবাণী মমতার

FIR খারিজের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর