নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রত্যাশা ছিল অনেকটাই। যদি দেশের অর্থমন্ত্রী করের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তকে আর্থিক ছাড় দেন, নিম্নবিত্তদের হাতে যদি সরাসরি টাকা পাঠিয়ে তাঁদের আয়ের সুযোগ করে দেন, গ্রামের মানুষ ও কৃষকদের যাতে আর্থিক উন্নতির মুখ দেখাতে পারেন এবং সর্বোপরি দেশের তরুণ প্রজন্মকে যদি একটু চাকরির সন্ধান দিতে পারেন। কিন্তু সব প্রত্যাশায় এদিন জল ঢেলে দিয়েছেন দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এদিন তিনি সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের যে বাজেট পেশ করেছেন তার অভিমুখই হচ্ছে ধনী, অর্থবান মানুষকে আরও ফুলে ফেঁপে উঠতে সাহায্য করা। সেখানে চূড়ান্ত ভাবে বঞ্চিত হয়েছেন আমজনতা। কোভিডকালে কিন্তু এই আমজনতাই সব থেকে বেশি তাকিয়ে ছিলেন নির্মলার দিকে যদি তিনি তাঁদের আয়ের কিছুটা মুখ দেখাতে পারেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা হয়নি। আর সেই কারনেই এবার বাজেটকে আমজনতার জন্য ‘শূন্য’ আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি ‘পেগাসাস বাজেট’ বলে তীব্র কটাক্ষ হানলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে জানিয়েছেন, ‘সাধারণ মানুষের জন্য এই বাজেট একটা শূন্য মাত্র। বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতিতে এমনিতেই জর্জরিত সাধারণ মানুষ। এই বাজেটে শুধু বড় বড় কথা বলা হয়েছে। কোনও কিছুই কেন্দ্রের এই বাজেটে গুরুত্ব পায়নি। পেগাসাস-স্পিন বাজেট।’ বস্তুত এবারের বাজেটে করছাড়ের ক্ষেত্রে যেমন বড় কিছু ঘোষণা করা হয়নি তেমনি দেশের নিম্নবিত্ত মানুষের আয়ের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও দিশা দেখাতে পারেনি। গ্রামীন অর্থনীতি যা দেশের মূল চালিকা শক্তি সেই দিকে কার্যত কোনও নজরই দেওয়া হয়নি। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোনও ঘোষণাই নেই, রেলের ক্ষেত্রে লোকাল ট্রেন বা দূরপাল্লার ট্রেন চালানোর মতো কোনও ঘোষণাই নেই। আগামী ৩ বছরে ৪০০ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর কথা বলা হলেও তার ভাড়া নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে। বাংলার ট্রেন প্রকল্পগুলি নিয়ে কোনও ঘোষনাই নেই। বরাদ্দের কথা ঘোষিত হয়নি কলকাতার মেট্রোরেল প্রকল্পগুলির জন্যও। উল্টে দেশের ৫টি নদী সংযোগ প্রকল্পের কথা বাজেটে বলা হয়েছে যার মধ্যে গঙ্গাও রয়েছে। আর সেক্ষেত্রে গঙ্গার জল ফরাক্কায় কম আসার সম্ভাবনা তৈরি হবে। যার অর্থ বাংলায় জলের প্রবাহ কমবে, আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে কলকাতা বন্দর সহ গঙ্গার তীরবর্তী এলাকার গ্রামের ও শহরের মানুষদের। এই সব ক্ষেত্রে তাই মুখ্যমন্ত্রী যে ক্ষোভ টুইটের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তা যথার্থই বলে অভিমত বাংলার অর্থনীতিবিদদের।