নিজস্ব প্রতিনিধি: সংসদ থেকে বিরোধীদের কেটেছেঁটে ফেলার পরে এবার নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার উঠে পড়ে লেগেছে ২৬ জানুয়ারির(Republic Day) দিল্লির কুচকাওয়াজে দেশের অ-বিজেপি রাজ্যগুলিকে কেটেছেঁটে ফেলে দিতে। বিহার, দিল্লি, পাঞ্জাব, কেরলের মতো বিরোধী রাজ্যগুলির ট্যাবলো(Tablo) আগামী ২৬ জানুয়ারির অনুষ্ঠান থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সেই তালিকায় ঢুকে গিয়েছে বাংলাও(Bengal)। ২০২৪ সালের সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠান থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলার ট্যাবলো। এবার সেই ট্যাবলোর বিষয়বস্তু ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) চালু করা ‘কন্যাশ্রী’(Kanyasree) প্রকল্প। এর আগে ২০১৫ সালেও এই প্রকল্পকে তুলে ধরে দিল্লিতে ট্যাবলো পাঠাতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। সেবারও তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। ৯ বছর বাদে এবারই একই ঘটনার পুনঃরাবৃত্তি। ফলে ২৪’র সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে থাকছে না বাংলা।
বাংলার মেয়েদের স্কুলছুট রুখতে, বাল্যবিবাহ ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেন ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। সেই প্রকল্প শুধু যে বাংলার বুকে চূড়ান্ত সাফল্যতার মুখ দেখেছে তাই নয়, বিশ্বের দরবারে রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্বীকৃতিও আদায় করে নিয়েছে। এক দশক ধরে চলা কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে বাংলার ৮১ লক্ষেরও বেশি মেয়ে। আর এই প্রকল্পের পিছনে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তারপরও বাংলার সাফল্য হিসেবে এই প্রকল্পকে ২০২৪’র সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে তুলে ধরা যাবে না। আদতে মোদি সরকার ও বিজেপি নিজেদের ঢক্কানিনাদ পেঠাতে যেমন ব্যস্ত, তেমনি দেশ থেকে বিরোধী পরিসরটাও মুছে দিতে ব্যস্ত। তাই বেছে বেছে দেশের সব অ-বিজেপি রাজ্যগুলির ট্যাবলো বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ গেরুয়া শিবির। তাঁদের দাবি, ট্যাবলো নির্বাচনের দায়িত্ব কোনও রাজনৈতিক দলের হাতে থাকে না, থাকে কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ দলের ওপর। একাধিক ধাপ অতিক্রম করে তবেই মেলে অংশগ্রহণের ছাড়পত্র।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর বাংলার তরফে যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য ট্যাবলো পাঠানো হবে তা কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ দলকে জানানো হয়েছিল। সেই জন্য সেই ট্যাবলোর নকশাও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরেই তা বাতিল করে দেওয়া হয়। মডেল ডেমনস্ট্রেশনের সুযোগটুকুও আর বাংলাকে দেওয়া হয়নি। এই একই পথে হেঁটে দেশের অবিজেপি রাজ্যগুলির ট্যাবলোও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাংলার সঙ্গে এই বঞ্চনা অবশ্য নতুন নয়। এর আগে ২০১৫ সালে কন্যাশ্রীর ট্যাবলো বাতিল করেছিল মোদি সরকার। তারপর ২০১৮ সালে ‘একতাই সম্প্রীতি’ নামের ট্যাবলোও বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। ২০২০ সালে ‘সেভ ওয়াটার সেভ লাইফ’ ট্যাবলোও বাতিক করে কেন্দ্র। ২০২২ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ট্যাবলো করতে চেয়েছিল রাজ্য। সেটাও করতে দেওয়া হয়নি।