নিজস্ব প্রতিনিধি: সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার দিল্লিতে বসতে চলেছে দেশের বিজেপি(BJP) বিরোধী মঞ্চ INDIA জোটের চতুর্থ বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগদান করতে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে চলে গিয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকের আগেই তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে ফোনে জোট শরিক দলের নেতানেত্রীদের কথা হয়েছে। তাতেই মোটামুটি জোটের অধিকাংশ শরিক দলের নেতানেত্রীরাই মমতার আসনরফার সূত্রকে(Seat Sharing Formula) মেনে নিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে সেই সূত্রেই আসনরফার আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কী সেই সূত্র? মমতার দাবি, যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, সেই রাজ্যে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে সেই দলকেই শেষ কথা বলতে দিতে হবে। কোন বিরোধী দল কত আসনে লড়বে, তা স্থির করবে সেই রাজ্যের প্রধান দলটি। এই সূত্র নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল বামেদের(Left Parties)। কিন্তু বামেদের আপত্তিকে মান্যতা দিতে চায়নি জোটের শরিক দলগুলি। যদিও কংগ্রেস(INC) এই সূত্র মেনে নেবে কিনা, সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় থাকছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে আসনরফার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও, বিষয়টি অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঝুলিয়ে রাখতে নারাজ মমতা। তিনি চান ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই এই রফা চূড়ান্ত হয়ে যাক। যদি কংগ্রেস বা বামেরা এই সূত্রে রাজী না হয় তাহলে অন্তত বাংলার মাটিতে তৃণমূল একক ভাবেই ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই করার প্রস্তুতি শুরু করে দেবে। পাশাপাশি এটাও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে INDIA জোটের একটি সচিবালয় তৈরি এবং এই বিরোধী মঞ্চের মুখপাত্রদের নিয়ে একটি প্যানেল তৈরির বিষয়েও কথা হতে পারে। এর আগের ১ সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরুতে জোটের তৃতীয় বৈঠকে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল যে, ‘যত দ্রুত সম্ভব’ আসন রফার নিষ্পত্তি করা হবে। যদিও সেই কথা কানে তোলেনি কংগ্রেস। এমনকি মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে তাঁরা গায়ের জোরে একক ক্ষমতায় বিজেপির বিরুদ্ধে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে নেমেছিল। সেই লড়াইয়ে তাঁরা যে শুধু হেরেছে তাই নয়, নিজেদের হাতে থাকা রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ও হারিয়ে বসে আছে।
কিন্তু এখন কংগ্রেস ধাক্কা খেয়ে আর আগের অবস্থানে কঠোর ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা, যাতে INDIA জোটের অধিকাংশ শরিক দলেরই মত থাকছে। বামেরা বাদে। তৃণমূল নেত্রীর আসন রফার সূত্র মান্যতা পেলে, বিহারে নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদব, পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তামিলনাড়ুতে এম কে স্ট্যালিন, মহারাষ্ট্রে উদ্ধবপন্থী শিবসেনা এবং এনসিপি, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ সিংহ যাদব, পঞ্জাব এবং দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালই আসন রফার ক্ষেত্রে শেষ কথা বলবেন সংখ্যার আধিক্যের জন্য। এমতাবস্থায় কংগ্রেস মঙ্গলবারের বৈঠকে কতটা সমঝোতায় যেতে রাজি থাকে, এখন সেটিই দেখার।