নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ ২৮ বছরের লড়াই অবশেষে জয়ের মুখ। সরকারি পেনশনের(Pension) আওতায় এলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কর্মীরা(West Bengal State Human Rights Commission Employees)। বাম জমানায়(Left Front) ১৯৯৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়। তারপর থেকে এতদিন কমিশনের কর্মীরা অবসরকালীন কোনও সুযোগ-সুবিধাই পেতেন না। প্রাক্তন কর্মী হিসেবে পেনশন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মীর মৃত্যুর পর পারিবারিক পেনশন কোনওটাই জুটত না। বামফ্রন্ট সরকারের ১৬ বছরে কমিশনের কর্মীরা অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। কিন্তু মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) জমানায় তাঁরা এবার পেনশনের মুখ দেখতে চলেছেন। আর সেই পেনশন প্রাপ্তির মূলে রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) সাম্প্রতিক একটি মামলার রায়।
আরও পড়ুন একের পর এক দুর্ঘটনা রাজ্যে, মৃত ৯
ঠিক কী হয়েছে? রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কর্মীদের পেনশনের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু সেই দাবি পূরণ হয়নি বাম জমানায়। এ বিষয়টা নিয়ে আগেই আদালতে মামলা হয়েছিল। সেই মামলাতেই সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মীদের ডেথ কাম রিটায়ারমেন্ট বেনিফিটের (DCRB) আওতায় আনতে হবে। সেই রায় মেনে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, ১৯৯৫ সালে কমিশন গঠিত হলেও স্বশাসিত এই সংস্থার যাবতীয় বিধি হয়েছে তার দু’বছর পর। সেই সূত্রেই ১৯৯৭ সাল থেকে মানবাধিকার কমিশনের অফিসার ও কর্মীদের জন্য পেনশন স্কিম কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন কালনা হাসপাতালকে NQAS Certificate দিচ্ছে মোদি সরকার
এই প্রসঙ্গে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘এটা কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। পেনশন চালুর সিদ্ধান্তকে তাই স্বাগত জানাচ্ছি। হাইকোর্টের এই কর্মীবান্ধব রায়ে আমি খুশি। আগামী দিনে রাজ্য সরকারের মাধ্যমেই কমিশনে নয়া নিয়োগ হবে। এই সংক্রান্ত প্রয়োনীয় বিধি ও নিয়মকানুন ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে।’ নবান্ন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কর্মীদের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সমতুল মর্যাদা প্রাপ্তির পিছনে প্রাক্তন মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা রয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তা হিসেবে কয়েকবছর আগে তিনিই লিখিতভাবে কমিশনের কর্মীদের অবসরকালীন সমস্ত সুযোগ-সবিধা পাওয়া উচিত বলে লিখিত নোট দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য অর্থদফতরের তৎকালীন কিছু আমলার আপত্তিতে এতদিন সেই সিদ্ধান্ত কার্যত ঝুলে ছিল।
আরও পড়ুন রেশন দোকান থেকে বাড়তি পরিষেবা, মতভেদ কেন্দ্র-রাজ্যের
মামলাকারীদের দাবি, আদালতে প্রাক্তন মুখ্যসচিবের সেই আইনি যুক্তিপূর্ণ লিখিত প্রস্তাব এই ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। কর্মীরা বাসুদেববাবুর প্রতি নিজেদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের মানবাধিকার ইউনিটের সভাপতি দীপঙ্কর ঘোষাল বলেন, ‘এই জয় কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত ও মৃত কর্মী ও পরিবারগুলির জয়।’