নিজস্ব প্রতিনিধি: গা ঢাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হল না। ধরা পড়তেই হল পুলিশের হাতে। দোলের দুপুরে রিজেন্ট পার্কে(Regent Park) গুলি করে খুনের(Murder) ঘটনায় অভিযুক্ত সুজিত মল্লিককে(Sujit Mallik) শনিবার দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ফলতা(Falta) থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হল কলকাতা(Kolkata) পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা এবং রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। কার্যত সুজিতের মোবাইল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকলেও ঘটনার পর থেকেই তার গতিবিধি বন্দী হয়েছিল এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজে। সেখানেই ধরা পড়েছিল সে নিজের স্কুটি নিয়ে বেহালা, জোকা, আমতলা হয়ে আরও দক্ষিণে চলে যাচ্ছে। তাতেই পুলিশের মনে হয় সে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে হয় আত্মগোপন করতে চাইছে নাহলে নদীপথে গঙ্গা পার হয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া হয়ে ভিন রাজ্যে পালানোর ছক কষছে। তার জেরেই নুরপুর স্টিমার ঘাটের কর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। কিন্তু নুরপুর অবধিও যেতে পারেনি সুজিত। তার আগেই সে ধরা পড়ে পুলিশের হাতে ফলতা থেকে।
দোলের দিন দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানার নতুনপল্লীতে পেশায় বাদাম বিক্রেতা সুজিত মল্লিকের বাড়িতে বসেছিল মদ্যপানের আসর। সুজিতের পাশের বাড়িতেই ভাড়া থাকত উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা দিলীপ চৌহান(Dilip Chouhan)। সেও বাদাম বিক্রেতা ছিল। অভিযোগ, পাশাপাশি বাড়িতে থাকার সুবাদে দিলীপের সঙ্গে সুজিতের স্ত্রীর পরিচয় থাকলেও খুব একটা বেশি কথা হতো না। কিন্তু সুজিতের স্ত্রীয়ের দিকে নজর পড়েছিল দিলীপের। সে সুজিতের স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেয়েছিল। কিন্তু দিলীপকে পাত্তা দিতেন না সুজিতের স্ত্রী। দোলের দিন সকালে সুজিতের স্ত্রীকে মদ্যপ অবস্থায় রঙ মাখাতে গিয়ে তাঁর শ্লীলতাহানি করে দিলীপ। অভিযোগ, সেই সময়ে দিলীপ বিয়ের প্রস্তাবও দেয় সুজিতের স্ত্রীকে। তার জেরেই দিলীপ ও সুজিতের মধ্যে লেগেছিল বচসা। ঘটনার সময় দুইজনের কয়েকজন বন্ধু তাদের বিবাদ থামিয়ে দিলেও দুপুর বেলায় কোথা থেকে একটি বন্দুক জোগাড় করে দিলীপের বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করে খুন করে সুজিত। যে বাড়িতে দিলীপ খুন হন সেই বাড়িটি দিলীপেরই এক আত্মীয়ের। সেই আত্মীয়ই পুলিশকে খবর দেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ে সুজিতের অবস্থান নিয়ে। কেননা সে নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ করে নিজের স্কুটি চালিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে তার গতিবিধি ধড়া পড়ে অনেক জায়গাতেই। তাতেই পুলিশ বুঝে যায় সে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় আত্মগোপন করতে চাইছে। আর তার জেরেই সতর্ক করে দেওয়া হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পুলিশ প্রশাসনকে। এরপরে এদিন সকাল থেকেই গোপন খবরের সূত্রে সুজিতের সন্ধানে যৌথ অভিযানে নাম কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা এবং রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। তার জেরেই এদিন দুপুরে ফলতা থেকে ধরা পড়ে সুজিত। তবে তার কাছ থেকে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি পাওয়া যায়নি। কিন্তু অস্ত্র সে কোথা থেকে কিনেছিল আর কোথাই বা লুকিয়ে রেখেছে সেটা তাকে জেরা করে জানতে চাইছেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকেরা।