নিজস্ব প্রতিনিধি: দক্ষিণ কলকাতার নেতাজীনগর থানা এলাকার বাসিন্দা অভীক মুখোপাধ্যায় চোর সন্দেহে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর থানার বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনি এলাকায় চোর সন্দেহে কিছু লোকের হাতে গণপিটুনি খেয়ে মারা যান গত বৃহস্পতিবার রাতে। সেই ঘটনায় এবার সিবিআই তদন্তের দাবি করল তাঁর পরিবার। পুলিশ অবশ্য ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ইতিমধ্যেই এক মহিলা সহ ৩জনকে গ্রেফতার করেছে ও ২জনকে আটক করেছে। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঘটনার সময় অভীকের সঙ্গে থাকা তাঁর বান্ধবী প্রিয়াঙ্কা সরকারকে যিনি পেশায় বার ডান্সার। সেই জেরাতেই বিস্ফোরক দাবি করেছেন ওই বার ডান্সার। তাঁর দাবি, অভীক তাঁর কাছে দাদার মতো ছিল। যদিও অভীকের পরিবার সেই দাবি খণ্ডন করেছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, দাদার মতো সম্পর্ক হলে মাঝরাতে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় অজ পাড়া গাঁয়ে কে বাইকে করে ঘুরতে যায়!
পুলিশ শুক্রবার সকাল থেকেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পিটিয়ে খুনের প্রমাণও পেয়েছে। রাস্তার নর্দমার পাশে ঘাসে রক্তের দাগ মিলেছে। মনে করা হচ্ছে স্থানীয় ৩-৪টি পরিবার এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। সেই পরিবারের ৮-১০জন মিলে বাড়ি থেকে লাঠিসোঁটা-রড নিয়ে অভীকের ওপর চড়াও হয়েছিল বলে খবর। অভিযুক্তরা অধিকাংশই পলাতক। তারা মদ্যপ ছিল কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রিয়াঙ্কাকে জেরা করা শুরু করে পুলিশ। সেই জেরা শেষ হয় মধ্যরাতে। সেখানেই বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, অভীক মাঝেমধ্যেই প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে বারুইপুরের আশেপাশে রাতে ঘুরে বেড়াতেন। কেননা, বারুইপুরে বাগানবাড়ি বানানোর জন্য জমির খোঁজ করছিলেন তিনি। তাই জমির খোঁজ করতে বারুইপুরের আশেপাশে নানা এলাকায় যেতেন অভীক। মাঠে বসে বান্ধবীকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে ফিরেও আসতেন। সেদিনও তেমন গিয়েছিলেন। তবে সেদিন অভীক ও তাঁর বান্ধবী মদ্যপ ছিলেন বলে প্রিয়াঙ্কাকে জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ
তবে প্রিয়াঙ্কা অভীককে নিয়ে যে দাবি করেছে সেটাই এখন অনেককে চমকে দিচ্ছে। প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছে, ‘অভীকের সঙ্গে আমার প্রায় ৯ বছরের সম্পর্ক। আমায় অভীক বোনের মতো ভালবাসত। আমি অভীককে দাদা বলে ডাকতাম। এছাড়া আর কোনও সম্পর্ক ছিল না। অভীপ মদ খেয়েছিল। আমি খাইনি। আমরা প্রথম প্রথম সোনারপুরের দিকেই ঘুরতে যেতাম। এতটা ভিতরে কখনও আসিনি। ঘটনার পরে আমিই শুক্রবার সকালে প্রথম পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের শাস্তি চাই।’ যদিও অভীকের পরিবারের দাবি, রীতিমত ছক কষেই খুন করা হয়েছে অভীককে। এমনকি ঘটনার সময় তাঁর সঙ্গে থাকা দাবি ব্রান্ডের ঘড়ি, সোনার চেন, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, নগদ টাকা ও মানি ব্যাগ সবই লুঠ হয়েছে।