নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) একাধিক নেতানেত্রীকে ঘিরে বার বার জল্পনা ডানা মেলেছে। সেই জল্পনা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে(TMC) যোগদান। সেই জল্পনা যে মিথ্যা নয় সেটা দেখিয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্জুন সিং, বাবুল সুপ্রিয়, জয়প্রকাশ মজুমদার, মুকুল রায়, শুভ্রাংশু রায়রা। জল্পনার সেই তালিকায় আছেন আরও অনেকেই। তাঁদের মধ্যে বার বার চর্চিত নাম হিসাবে উঠে এসেছে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের(Locket Chatterjee) নাম। এমনকি দিলীপ ঘোষের(Dilip Ghosh) নামও উঠেছে সেই তালিকায়। কেননা দিলীপের হয়ে প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন ফিরহাদ হাকিম থেকে কুণাল ঘোষেরা। আর এই অবস্থায় রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বঙ্গ বিজেপি যে পরিচালন কমিটি গড়ল তাতে ঠেঁই দেওয়া হল না দিলীপ ও লকেটকে। আর তার জেরেই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে দিলীপ-লকেটে কী আস্থা আর নেই পদ্মশিবিরের? তাঁরাও কী খুব শীঘ্রই ফুল বদল করতে পারেন?
বঙ্গ বিজেপিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৈরি হয়েছে পরিচালন কমিটি। সেই কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে রায়গঞ্জের সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে(Debasree Chowdhury), যিনি নিজের জেলাতেই দলকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখাতে পারেননি। জেলা থেকে যে ২জুন জিতেছিলেন তাঁরাও চলে এসেছেন তৃণমূলে। এহেন দেবশ্রী বঙ্গ বিজেপিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কী দিশা দেখাবেন নাকি আরও দিশাহীনতার দিকে দলকে ঠেকলে দেবেন সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরেই। তবে সেই প্রশ্নকে ছাপিয়ে গিয়েছে কমিটিতে ঠাঁই না পাওয়া দিলীপ-লকেটের প্রসঙ্গটি। দেবশ্রী ছাড়াও ওই কমিটিতে কো-ইনচার্জ হিসাবে জায়গা পেয়েছেন সাংসদ জগন্নাথ সরকার, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও রাজ্য নেতা শ্যামাপদ মণ্ডল। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক দীপক বর্মনকে। কেন এই কমিটিতে দিলীপ-লকেটকে রাখা হয়নি তা নিয়ে প্রকাশ্যে বিজেপির তরফে কিছু জানানো হয়নি। তবে চার দেওয়ালের অন্দরে কাল পাতলে কিন্তু শোনা যাচ্ছে দিলীপ-লকেটের ফুল বদলের সম্ভাবনার গল্প।
এই অবস্থায় চলতি সপ্তাহের শেষেই হয়দরাবাদে দু’দিনব্যাপী বিজেপির ন্যাশনাল এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক বসছে। সেখানে বাংলায় দলের হাল নিয়ে আলোচনা হবে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের সাংগঠনিক রিপোর্টের ওপর ভরসা করেই মোদি-শাহ-নাড্ডারা বারবার দাবি করেছিলেন, ‘আবকে বার ২০০ পার’। বাস্তবে সেই দৌড় থেমে গিয়েছিল ২০০’র অর্ধেক ১০০’র অনেক আগেই। মাত্র ৭৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। মমতা-ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল বিজেপি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আর বঙ্গ বিজেপি নেতাদের ওপর যেমন বেশি আস্থা রাখতে পারছেন না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তেমনি আস্থা নেই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নেতাদের ওপরেও। তাই সঙ্ঘের ঘরের মেয়ে দেবশ্রীকে মাথায় রেখে পঞ্চায়েত ভোট গড়ার কমিটি গড়েছে পদ্মপার্টি। যদিও তাতে সাফল্যের মুখ আদৌ দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে দলেরই অন্দরে।