নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার(Kolkata) সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ সহ দেশের মূল ভূ-খণ্ডের সড়ক পথে যোগাযোগ রাখার জন্য এখন প্রধান ভূমিকা পালন করে চলেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতু(Vidyasagar Setu)। রবীন্দ্র সেতু বা হাওড়া ব্রিজ এবং দ্বিতীয় বালি ব্রিজ বা নিবেদিতা সেতু থাকলেও যানবাহন চলাচলের নিরিখে বিদ্যাসাগর সেতুই কার্যত প্রধান রাস্তা হয়ে উঠেছে কলকাতায় আসার ক্ষেত্রে বা যাওয়ার ক্ষেত্রে। সেই বিদ্যাসাগর সেতুর সঙ্গে ২ এবং ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে(Kona Expressway)। এই রাস্তার ওপরেই থাকা সাঁতরাগাছি সেতুটি(Santragachi Bridge) সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আগামী সপ্তাহের শেষ দিক থেকে টানা দেড় মাসের জন্য বন্ধ রাখা হবে। এই সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা সব যানবাহণই ভিন্ন পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরেও এই রাস্তা বন্ধের জন্য আমজনতাকে বেশ বড়সড় দুর্ভোগের মুখে পড়তে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা সেতুতে রাতের বেলায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ রাখা হলেও দিনের বেলায় মাত্র ১টি লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করানো হবে। যার অর্থ লম্বা যানজট ও গাড়ির লাইন।
আরও পড়ুন দিঘায় এবার জলের নীচে পার্ক গড়বে মমতার সরকার
আপাতত ঠিক হয়েছে ১৯ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেতুটি রাত ১১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে যানবাহন চলাচলের জন্য। ওই সময়ে কলকাতার দিক থেকে যে সব ভারী যানবাহন ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকে যাবে সেগুলিকে নবান্ন থেকে আন্দুল রোড দিয়ে ঘুরিয়ে আলমপুর হয়ে পাঠানো হবে। কলকাতার দিকে রাতের বেলায় যে সব গাড়ি আসবে তাদেরকেও এই পথেই কলকাতায় আসতে হবে। দিনের বেলায় সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে ১টি মাত্র লেন দিয়ে যাতায়াত করা যাবে। সেই লেন দিয়ে শুধুমাত্র যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারবে। পণ্যবাহী গাড়ি দিনের বেলায় কলকাতায় আসার ক্ষেত্রে বা কলকাতা থেকে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিবেদিতা সেতু ব্যবহার করতে হবে। তবে ছোট পণ্যবাহী গাড়ি সলপ মোড় থেকে হাওড়া আমতা রোড ধরে কদমতলা জল ট্যাঙ্কি মোড়ে এসে সেখান থেকে ড্রেনেজ ক্যানেল রোড ধরে বেলেপোল মোড়ে এসে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বিদ্যাসাগর সেতুর দিকে আসতে হবে। এই একি পথে দিনের বেলায় ছোট পণ্যবাহী গাড়ি কলকাতার বাইরে যেতে পারবে। তবে ঠিক কবে থেকে সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যদিও এই পরিকল্পনা দ্রুত রূপায়ণের পথে যাতে কোনও বাধা সৃষ্টি না হয় তার জন্য মুখ্যসচিব হাওড়া ও কলকাতার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক সেরে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন হাওড়া শাখায় কাজের জন্য বাতিল একাধিক ট্রেন, দেখে নিন তালিকা
সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে এখন দৈনিক এক লক্ষ যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে পণ্যবাহী গাড়ি থাকে প্রায় ২০ হাজার। পণ্যবাহী গাড়ি বাদ দিলেও প্রতিদিন প্রায় ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে এই সেতু দিয়ে। তার মধ্যে যেমন যাত্রীবাহী বাস আছে তেমনি আছে ছোট চার চাকার গাড়িও। দিনের বেলায় যখন ১টি লেন দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করবে তখন এই ৭০ হাজার গাড়ি যে তীব্র যানজটের মধ্যে পড়বে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেক্ষেত্রে আমজনতাকেও বড়সড় দুর্ভোগের মুখে যে পড়তে হবে সেই আশঙ্কাও করছেন পুলিশের আধিকারিকেরা। একই সঙ্গে পণ্যবাহী গাড়ি দীর্ঘপথ ঘুরে কলকাতায় প্রবেশ করার জন্য বা কলকাতা থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য যখন নিবেদিতা সেতু ব্যবহার করবে তখন মহানগরের বুকেও যানজটের আশঙ্কা করছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। পুলিশ কর্তাদের তাই পরিকল্পনা রয়েছে কিছু পণ্যবাহী গাড়িকে টালা ব্রিজ হয়ে ঘুরিয়ে দেওয়ার।