নিজস্ব প্রতিনিধি: বিপ্লব বললেও সম্ভবত খুব কম বলা হবে। কেননা টাকার অঙ্ক নেহাত কম নয়। ৩০ হাজার কোটি টাকা(30 Thousand Crore Rupees)। এই বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ(Loan) হিসাবে পেতে চলেছে গ্রাম বাংলার(Rural Bengal) স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি(Self Help Groups)। নতুন অর্থবর্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারের পঞ্চায়েত দফতর(Panchayat Department) এই বিপুল পরিমাণ ঋণ টার্গেট বেঁধে দিয়েছে রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে পাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। জেলাগুলিকে নিজ নিজ লক্ষ্যমাত্রা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। অস্বীকার করার উপায় নেই এই বিপুল পরিমাণ টাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের হাত ধরেই বাংলার অর্থনীতিতে বিনিয়োগ হতে চলেছে। এর ফসল যে শুধু ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাই পাবেন তাই নয়, সমৃদ্ধ হবে রাজ্যের কোষাগারও।
আরও পড়ুন INDIA বলা যাবে না, বলতে হবে আইএনডিআইএ, ফরমান বিজেপিতে
১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার। ফলে চরম ধাক্কার মুখে পড়েছে গ্রামবাংলার অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে গ্রামীণ অর্থব্যবস্থাকে সচল রাখতে মমতা সরকারের বাজি গ্রাম বাংলারই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। তাই নতুন অর্থবর্ষে তাদের ঋণ প্রদানের অঙ্ক নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকায়। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার আঘাত থেকে এই ঋণের মাধ্যমে গ্রামবাংলাকে খানিকটা হলেও বাঁচানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন রাজ্যের অর্থ ও পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকেরা। কেননা এই ঋণের টাকা সময় মেনেই পরিশোধও করতে হবে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। কিন্তু সেই শোধের পথেই তাঁদের বাড়তি আয়ের মুখও দেখতে হবে। ২০২২-২৩ সালে রাজ্যে ক্রেডিট লিঙ্কেজে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছিল। ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণের মাইল ফলকও স্পর্শ করে জেলাগুলি। তাই নয়া অর্থবছর শুরু হতেই ২১ হাজার কোটি ঋণপ্রদানের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়। কোন জেলায় কত টাকার ঋণ দিতে হবে, সেটাও বলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফের তাতে বড়সড় পরিবর্তন আনা হল। কারণ একটাই, যারা ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা সময় মতো পরিশোধ করতে পারছে তাঁরা কেন ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ পাবেন না আর কেনই বা তা পরিশোধ করতে পারবেন না? নিশ্চয় পারবেন। সেই বিশ্বাসেই নবান্নের এই সাহসী পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন GST প্রতারণা নিয়ে নির্মলাকে চিঠিতে তোপ দাগলেন অমিত
এদিন থেকেই বাংলাজুড়ে শুরু হচ্ছে ‘শিল্পে সমাধানে’ কর্মসূচি। ব্লকে ব্লকে হবে শিবির। সেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের জন্য ঋণ-আবেদনের ব্যবস্থাও থাকবে। এই কর্মসূচিকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে জেলাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া বা ক্রেডিট লিঙ্কেজ অনুযায়ী দেশে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে বাংলা। কেরল, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে বার্ষিক ঋণ প্রদানের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। সূত্রের খবর, এবার এই তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকারে মরিয়া মমতার বাংলা। সেই কারণেই লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত। এর ফলে প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে বার্ষিক ঋণ প্রদানের পরিমাণও অনেকটা বেড়ে যাবে। রাজ্যের এই পদক্ষেপে একদিকে মহিলাদের স্বনির্ভরতা বাড়বে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটবে। তবে এক ধাক্কায় এত টাকা ঋণ দেওয়ার চাপ জেলাগুলি কতটা নিতে পারবে, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে।