নিজস্ব প্রতিনিধি: নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের ৮ তলার কার্নিশ থেকে পড়ে মৃত্যু হওয়া রোগী সুজিত অধিকারী ভুগছিলেন মানসিক সমস্যায়। দিন কয়েক আগে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। তার পর থেকে তিনি পালটে যান বলে দাবি পরিবারের। কোনও অর্থনৈতিক সঙ্কট ছিল না বলে জানিয়েছে পরিবার।
সুজিত অধিকারীর (Sujit Adhikari) পিসি মঞ্জু দাস জানান, সুজিতের একটা ভাঙা লোহা, জিনিসপত্রের দোকান ছিল। দুই সন্তান স্ত্রীকে নিয়ে ওদের সুখের সংসার ছিল। কিন্তু, কয়েকদিন আগেই ওর স্ত্রী মারা গিয়েছে। এরপর থেকেই সুজিত কেমন গুম হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের দুই সন্তান রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্ত্রীর মৃত্যুর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। কথাবার্তা খুব একটা বলতেন সকলের সঙ্গে। তার মাঝে একদিন আচমকা মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। আর তার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিল মল্লিকবাজারের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে।শনিবার তাঁর ছুটিও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাড়ি ফিরে যাওয়ার দিন কেন এমন ঘটনা ঘটালেন তিনি তা ভেবে আরও মুষড়ে পড়ছেন পরিজনেরা। ইতিমধ্যে নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছেন সুজিতের পিসি৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হাস্পাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৩০৪(এ) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷
উল্লেখ্য শনিবার মল্লিকবাজারের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের ৮ তলায় জানলা থেকে বেরিয়ে আসেন সুজিত অধিকারী নামে ওই রোগী। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে টানা দেড় ঘণ্টা ৮ তলার কার্নিশে বসেছিলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করতে দমকল, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী পৌঁছলেও ব্যর্থ হন। কার্নিশ থেকে ঝুলতে ঝুলতে পড়ে যান ওই রোগী। অতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগীর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে মল্লিকবাজার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। কী ভাবে ওই রোগী জানলা থেকে বেরিয়ে কার্নিশে পৌঁছল সেই বিষয়েও জানতে চেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।