নিজস্ব প্রতিনিধি: মেছোবাজারে লেগেছে যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধ বেআব্রু হচ্ছে মেছোবাজারের সব কেলোরকীর্তি। সেই সব কাজ করছেন আবার মেছোবাজারের কর্তাকর্ত্রীরাই। কেউ গোপন বৈঠক করছেন, কেউ সেই বৈঠক সমর্থন করে বিবৃতি দিচ্ছেন, আবার কেউ পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দিচ্ছেন। নজরে বঙ্গ বিজেপি, যা এখন মেছোবাজারের রূপ নিয়েছে। এদিন লকেট চট্টোপাধ্যায়(Locket Chatterjee) বৈঠক করেছেন দলের বিক্ষুব্ধ শিবিরের সঙ্গে। প্রথম দিকে বৈঠক গোপন করা হলেও পরে তা চলে আসে সংবাদমাধ্যমের সামনে। সেই বৈঠক নিয়ে আর রাখঢাক রাখেননি লকেট। সেই বৈঠক ঘিরে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব তির্যক দৃষ্টি দেওয়ায় তা নিয়ে আবার পাল্টা আক্রমণ শানলেন তথাগত রায়(Tathagata Roy)। সাফ জানালেন। ‘দলটা পচে গিয়েছে’।
সোমবার বঙ্গ(Bengal) বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন লকেট। বৈঠকে লকেট ছাড়াও ছিলেন, জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারি, সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সমীরণ পাল। বৈঠক প্রসঙ্গে লকেট জানান, একটি অনুষ্ঠানে সবার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। রাজনীতিকরা বসে তো ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করবে না। রাজনীতির কথাই হল। দল নিয়ে কথা হয়েছে। আর কোনও একটি দলে আছি বলে আমি দলের কারোর সঙ্গে কথা বলতে পারব না এমন তো নয়। এখন তো তৃণমূলের লোকেরা এসেও কথা বলছে। কারোর সঙ্গে কথা বলা কখনও অপরাধ হতে পারে না।’ লকেটের এই মন্তব্য ও বৈঠক নিয়ে প্রথমে বঙ্গ বিজেপির(BJP) তরফে কিছু না বললেও বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন তথাগত রায়। তিনি সাফ জানান, ‘দলটা পচে গিয়েছে। দলের সমস্যা নিয়ে দলকে বার বার জানিয়েও কোনও ফল হচ্ছে না। তাই যা হওয়ার সেটাই হচ্ছে। নিজের নিজের মতো করে সব বৈঠক করছে। দল কামিনী-কাঞ্চনে ছোঁয়ায় যা হওয়ার সেটাই হয়েছে। পচে গিয়েছে পুরো।’ তথাগতবাবুর এই বিবৃতির পরেই বঙ্গ বিজেপি মুখ খুলেছে। দলের তরফে শমীক ভট্টাচার্য(Shamik Bhattacharya) জানিয়েছেন, ‘বিজেপি গণতান্ত্রিক দল। তাই কেউ কারোর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না, কথা বলতে পারবেন না এমন কথা দলের সংবিধানে কোথাও বলা হয়নি। আর লকেট চট্টোপাধ্যায় যাদের সঙ্গে বৈঠক করেছন তাঁরা তো দলেরই লোক। সাসপেন্ড তো সাময়িক, আর সাসপেন্ড মানে তো দলের বাইরে নয়। দলের মধ্যেই। তাই বৈঠক করে লকেট চট্টোপাধ্যায় ভুল তো কিছু করেননি।’
এখন অনেকেই মনে করছেন লকেট ইস্যুতে দলের মধ্যেও ক্রমশ কোনঠাসা হতে শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বরা। তাই নতুন করে লকেটের বিরুদ্ধে আর কোনও তোপ দাগতে চান না তাঁরা। বরঞ্চ লকেটের মান অভিমান থেকে তাঁর সব কার্যকলাপকে এখন লঘু ভাবেই দেখাতে চাইছেন তাঁরা। কার্যত সেটা নিজেদের মুখ বাঁচানোর জন্যই। তবে লকেট এদিন আবারও সরব হয়েছেন দলের হুগলি জেলা কমিটির গঠন নিয়ে। তাঁর অভিযোগ তাঁকে কিছু না জানিয়ে, তাঁর সঙ্গে কোনও কথা না বলে ওই কমিটি গঠিত হয়েছে। লকেটের সরাসরি অভিযোগ, রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর দিকে। এই প্রসঙ্গে লকেট জানিয়েছেন, ‘ওই কমিটির সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই নিজেদের ইচ্ছেমতো কমিটি তৈরি করেছেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। আমি এই কমিটি নিয়ে কোনও দায় বা দায়িত্ব নেব না।’