নিজস্ব প্রতিনিধি: চার দিন আকাশ-বাতাসে শুধুই বেজেছিল আনন্দের সুর। কিন্তু নবমী নিশি পোহাতেই সব কিছুই যেন এক লহমায় বদলে গেল। চারিদিকে শুধু বিষাদের এক করুণ সুর বাজছে। কেননা আজ পাঁচদিন মর্ত্যে অবস্থানের পরে কৈলাশে পতিগৃহে ফিরছেন উমা। নিজের মেয়েকে যেমন পতিগৃহে পাঠানোর সময় বাবা-মায়ের চোখের কোন যেমন চিকচিক করে ঠিক তেমনই আজ বাঙালি হিন্দুদের চোখের কোনে জল জমেছে। বুকের ভিতরে কেন যেন একটা অস্বস্তি মোচড় দিচ্ছে। অন্যরকম আবেগ ও মন খারাপ করা এক অনুভূতি। কেননা ফের উমার ফিরে আসার জন্য এক বছর অপেক্ষায় থাকতে হবে।
সকাল থেকেই বনেদি বাড়ি থেকে শুরু করে আবাসন এবং বারোয়ারি পুজামণ্ডপগুলিতে দশমীর বিহিত পুজো এবং পুজো শেষে দর্পণ বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমেই দেবী দুর্গার আনুষ্ঠানিক বিদায় পর্ব সম্পন্ন হয়। আর দর্পণ বিসর্জনের পরে শুরু হবে পুরাণ নিয়ম মেনে দেবী বরণ পর্ব। রীতি অনুযায়ী, সধবা মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে মা দুর্গাকে সিঁদূর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদূর ছোঁয়ানোর পর তা প্রথমে নিজের সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখিয়ে দেন। মুখ রাঙিয়ে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান, যা সিঁদূর খেলা নামে পরিচিত। বাগবাজার সর্বজনীনে সিঁদূর খেলায় মেতে উঠতে অপেক্ষার প্রহর গুনতে শুরু করেছেন অনেকে।
কলকাতার বাবুঘাট, বাগবাজার সহ গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন উপলক্ষে ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বিঘ্নে নিরঞ্জন পর্ব সম্পন্নে কলকাতা পুরসভার বেশ কয়েকশো কর্মী-আধিকারিককে মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা থামাতে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকেও বিশেষ বন্দোবস্থ করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘাটে দমকলের কর্মীদের পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীদেরও মোতায়েন করা হচ্ছে।