নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার ছেলেমেয়েরা অর্থাভাবের কারণে যাতে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চালু করেন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড(Student Credit Card) প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলার তরুণ-তরুণিদের মাত্র ৪ শতাংশ হারে সুদের বিনিময়ে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়। সেই ঋণ পরবর্তী ১৫ বছর ধরে শোধ করা যায়। ৪০ বছর বয়স পর্যমত এই ঋণের জন্য আবেদন করা যায়। বাংলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার ছাত্রছাত্রী এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঋণ পেয়েছে, যার মূল্য আনুমানিক ৬৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি প্রাথমিক ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার আবেদনকারীকে। যার মূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। এখনও যে ৪৫ হাজার আবেদন বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে পড়ে আছে, তার নিষ্পত্তি আগামী ৩০ জুনের মধ্যে করার জন্য এবার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী(Harikrishna Diwadi)।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রদানের ক্ষেত্রে গতি আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার ব্যাঙ্কগুলিকে অনুরোধ করেছেন। পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তরেও যাতে এই কার্ডপ্রদানের ক্ষেত্রে গতি আসে তার জন্যই সচিবদের বিশেষ নজর দিতেও বলেছেন। বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যসচিবকেও। সেই সূত্রেই শনিবার মুখ্যসচিব সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন নবান্নে(Nabanna)। এই বৈঠকেই পড়ে থাকা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আবেদন পত্র দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। এই মুহূর্তে প্রায় ২০টি ব্যাঙ্ক যুক্ত হয়েছে এই প্রকল্পের সঙ্গে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ও ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক সহ আরও ৬টি ব্যাঙ্ক। তাদের সকলকেই বেশি করে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতে আবেদন করা হয়েছে। কারণ এই প্রকল্পের অধীন ঋণের জামিনদার হল রাজ্য সরকার। তাই ব্যাঙ্কের টাকা মার যাওয়ার কোনও ভয় নেই।
বৈঠকে ঠিক হয়, আগামী জুন মাসে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রায় চার হাজার ব্রাঞ্চে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আবেদনকারীদের জন্য বিশেষ ক্যাম্প করবে রাজ্য শিক্ষাদফতর। প্রাথমিকভাবে আবেদন মঞ্জুর হলে এই ক্যাম্পেই প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হলেও, আবেদনকারী পরবর্তী পদক্ষেপে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা করছে না বা তা জমা দিতে দেরি করছে। প্রাথমিক অনুমোদন পাওয়া সত্ত্বেও যারা এখনও নথি জমা করেনি, তাদের ফোন করে এর কারণ জানতে চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ। আবেদন করা সত্ত্বেও এরা যদি এই মুহূর্তে ঋণ না নিতে চায়, তাহলে সেইমতো পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে শনিবারের বৈঠকে।