এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

উৎসব উদযাপন ও বিষণ্ণতা

নিজস্ব প্রতিনিধি: উৎসব হলো সেই সময় যখন আমরা খুশি এবং আনন্দিত বোধ করি। বন্ধুবান্ধব, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে মিলেমিশে ছুটি উপভোগ করি। কিন্তু উৎসব আনন্দ মুখর হলেও প্রকৃতপক্ষে কয়জন এই উৎসবের দিনে আনন্দ অনুভব করেন? উৎসবের বিপরীত দিকে একটি দেওয়াল আছে, যাকে বলা হয় ফেস্টিভ ব্লুজ। যেখানে অনেকেই হতাশা, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতায় ভোগেন, বিশেষ করে এই উৎসবের দিন গুলোতে।

কেন এটি হয়

১) একাকীত্ব এর অন্যতম কারণ। অনেক সময় চাকুরীগত কারণে, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের থেকে দূরে থাকা, একাকীত্ব বোধ তৈরি করে। এই উৎসবের দিন গুলোতে যখন আমরা অন্য সমস্ত পরিবারকে ও বন্ধু-বান্ধবদের একসাথে মিলিত হতে, উদযাপন করতে দেখি, তখন তাদের পাশাপাশি নিজেদের একলা থাকার মন খারাপটা আরও যেন বেড়ে যায়।

২) উৎসবে, আত্মীয়-স্বজনের সাথে থাকা, উদযাপন করা, যেমন একটি ভালো লাগার জায়গা, তেমনই কখনও কখনও এই আত্মীয়-স্বজনরাও দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের নেতিবাচক কথা, সমালোচনামূলক মন্তব্য, অনেক সময় আমাদের হতাশা ও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৩) অনেকে সিজনাল অ্যাফেকটিভ ডিসঅর্ডারে (এসএডি) ভোগেন। তাড়াতাড়ি অন্ধকার নেমে আসা, মেঘাচ্ছন্ন দিন, নিস্তেজ আবহাওয়া ইত্যাদি বিষন্নতা বাড়িয়ে দেয়। এর সাথে সাথে অন্যদের আনন্দ উপভোগ করা, তাদের আনন্দ উপভোগের মুহূর্তের ছবি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা, ইত্যাদি নিজেদের আরও নেতিবাচকতা বাড়িয়ে দেয়।

৪) আর্থিক কারণের জন্য এই উৎসবের সময় বিভিন্ন মানুষ অত্যধিক চাপ অনুভব করেন। সকলের জন্য উপহার কেনা এবং উপভোগ করার জন্যও আর্থিক সংস্থান থাকা প্রয়োজন।

৫) খুশি থাকার চাপ অনেক সময় আমাদের বিষন্নতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই সময়, খুশি থাকতে হবে, কেনাকাটা করতে হবে, বন্ধু বান্ধবদের কাছে যেতে হবে, সবটা মিলিয়ে, আমার মন খারাপ লাগলে চলবে না, এই একটা চাপ মনের মধ্যে কাজ করতে থাকে। ফলে নিজের অজান্তেই নিজেকে একটা অতিরিক্ত চাপের মধ্যে ফেলতে থাকি যে আমাকে খুশি থাকতেই হবে। কিন্তু বিপরীতক্রমে এটি আমাদের উদ্বেগ ও হতাশা বাড়িয়ে তোলে।

কি করবেন

১) উৎসব আসার আগে থেকেই উৎসব নিয়ে একটি পরিকল্পনা করে রাখুন। অনিশ্চয়তা আমাদের মধ্যে চাপ তৈরি করে। আপনি আগে থেকে কিভাবে এই দিনগুলো কাটাবেন সে পরিকল্পনা করে রাখলে, অনেকটা চাপমুক্ত থাকবেন এবং আর্থিক দিকটাও ভালো করে পরিচালনা করতে পারবেন।

২) নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবেন না। যদি আপনি পরিবার বা আত্মীয় স্বজনের থেকে অনেক দূরে থাকেন, তাহলে আপনার বর্তমান জায়গার বন্ধু-বান্ধব বা যাদের সাথে যোগাযোগ করলে আপনার ভালো লাগবে, তাদের সাথে যোগাযোগে থাকুন। যদি সেরকম কেউ না থাকে, তাহলে আপনার নিজের পছন্দমত সময় কাটান। যে কাজ আপনাকে আনন্দ দেবে সেই কাজ করুন। আমাদের প্রত্যেকের কাছে উদযাপন এবং আনন্দ পাওয়ার ভাষা আলাদা। সেটি যে সবসময় হইহুল্লোড় করে বা কারুর সাথেই পালন করতে হবে, তা নয়।

৩) অন্যের সাথে তুলনা করবেন না। প্রত্যেকের উদযাপনের ভাষা আলাদা হতে পারে। কেউ একটি আনন্দদায়ক ছবি পোস্ট করলেন মানে, তার পুরো জীবনটাই আনন্দময় এমনটা নাও হতে পারে। আবার অনেকেই নিজের মতন করে আনন্দ করেন যেটা অন্যের সাথে নাও মিলতে পারে। নিজের পরিস্থিতি অনুযায়ী ভালোলাগা এবং উদযাপন করার প্রক্রিয়াটা খুঁজে নিন। হতে পারে এটি একটি অনাথ আশ্রম বা বৃদ্ধাশ্রমে সময় কাটানো। নিজের সময় নিজের মতোন করে উপভোগ করুন।

৪) প্রয়োজনে সাহায্য নিন। অনেক সময় আমাদের বিষন্নতা এবং উদ্বেগ অনেকটা বেশি হয়ে যায়, বিশেষতঃ আলোর রোশনাইএর দাঁড়িপাল্লায় বিচার করে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

আমাদের সমাজ উৎসব সম্পর্কে একটা চিত্র তৈরি করে। ভোগ করাকে এবং আলোর রোশনাই এ উপভোগ করাকেই আমরা উদযাপনের পরিপূর্ণ রূপ বলে মনে করি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, উদযাপন পুরোটাই নিজস্ব চেতনা। নিজস্ব বোধ। একটা ঘরের কোণে থেকেও মানুষ সুখী বোধ করতে পারে। খুশি হওয়ার জন্য কোন চাপ নেবেন না। এমনটা নয় যে উৎসবের সময় আপনাকে খুশি থাকতেই হবে। হ্যাঁ, এই সময়েও আপনার মন খারাপ হতে পারে এবং এই দিনগুলো আপনি আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোও কাটাতে পারেন। সাধারণভাবে কাটালে আপনার ভালো থাকার পরিপূর্ণতা কিছু কমে যাবে না। মনে রাখবেন যে উদযাপনের আসল চেতনা ভেতর থেকে আসে।

লেখক : পুষ্পিতা মুখার্জি (মনোবিদ ও শিক্ষিকা)

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

টেকঅফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময় সিট সোজা রাখতে বলা হয় কেন?

কাজের চাপে মেজাজ হারাচ্ছেন! নিজেকে শান্ত রাখবেন কী করে?

বয়স ৩০ হলে ভুলেও এই ৫ টি খাবার ছোঁবেন না!

বৈশাখী পূর্ণিমা কবে ? মাহাত্ম্য ! লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে কি করবেন?

বন্দে ভারতের মেনুতে বিরাট বদল! লাঞ্চ-ডিনারে মিলবে সর্ষে-ইলিশ, কাতলা-কালিয়া

আলু খেলে সুগার বাড়ে ? জেনে নিন কী বলছেন চিকিৎসকেরা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর