28ºc, Haze
Friday, 24th March, 2023 9:13 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি, লখনউ: এলাহাবাদ হাই কোর্টের শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে শেষ পর্যন্ত কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের জেল মুক্তি সংক্রান্ত নথিপত্রে স্বাক্ষর করলেন লখনউয়ের দায়রা আদালতের বিচারক। লখনউয়ের জেলা সংশোধনাগারের সুপারকে পাঠানো নির্দেশ নামায় তিনি লিখেছেন, ‘অন্য কোনও মামলা না থাকলে এবং ব্যক্তিগন্ড বন্ড জমা দিলে সিদ্দিক কাপ্পানকে যেন জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’ ওই নির্দেশ পাওয়ার পরেই জেল থেকে কেরলের সাংবাদিককে মুক্তি দেন লখনউ জেলের সুপার।
২০২০ সালে উত্তরপ্রদেশের হাথরসে এক দলিত তরুণীকে গণধর্ষণের পরে পুড়িয়ে মেরেছিল দুষ্কৃতীরা। গোটা দেশই ওই ন্যক্কারজনক ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। ওই বছরের অক্টোবরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য হাথরসে যাওয়ার পথে কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানকে গ্রেফতার করে যোগী রাজ্যের পুলিশ। মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়ায় ইউএপিএ-সহ একাধিক কঠোর ধারায় মামলা দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ধৃত সাংবাদিক কাপ্পান নিষিদ্ধ সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সদস্য। শুধু উত্তরপ্রদেশ পুলিশ নয়, কাপ্পানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও। তার পর থেকে জেলই ঠিকানা কাপ্পানের। নিম্ন আদালতে একাধিকবার জামিনের আর্জি খারিজ হওয়ার পরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের দরজায় কড়া নেড়েছিলেন কাপ্পান।
গত ৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট কেরলের সাংবাদিককে অন্য সমস্ত মামলায় জামিন দেয়। ২৩ ডিসেম্বর ইডির দায়ের করা আর্থিক তছরুপের মামলায় কাপ্পানের জামিন মঞ্জুর করেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি দীনেশ কুমার সিংহ। ফলে দীর্ঘ দুই বছর বাদে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছিল কেরলের সাংবাদিকের। কিন্তু কাপ্পান বুঝতেই পারেননি, যোগী রাজ্যে হাই কোর্টের নির্দেশের চেয়েও সরকারি লাল ফিতের বাঁধন কত শক্তিশালী। এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনই বেঞ্চের নির্দেশ থাকা সত্বেও গত ৪০ দিন কাপ্পানের জেল মুক্তির নথিপত্রে স্বাক্ষর না করে নানা টালবাহানা করে চলেছিলেন লখনউয়ের দায়রা আদালতের বিচারক। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই এদিন সুড়সুড় করে জামিন সংক্রান্ত নথিপত্রে স্বাক্ষর করেন।