নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ভারতে মোদি জমানার মতোই এপার বাংলায় শেখ হাসিনার শাসনকালে দেশজুড়ে চলছে অঘোষিত সেন্সরশিপ আর ভিনধর্মীদের কণ্ঠরোধের পালা। আর সরকারের ওই ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ যাতে বলিষ্ট কণ্ঠে আওয়াজ তুলতে পারে তার জন্য কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অভিনব ভাস্কর্য তৈরি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের একদল পড়ুয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্র কেন্দ্রের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কবিগুরুর ওই অভিনব ভাস্কর্যটি বসানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে রক্তাক্ত গীতাঞ্জলি হাতে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ। মুখে টেপ সাঁটা। ইতিমধ্যেই অভিনব ভাস্কর্যটি ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাতেই অনেকে অভিনব ভাস্কর্যটি দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হাজির হয়েছেন। কেউ-কেউ অভিনব ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে নিজস্বীও তুলেছেন।
কবিগুরুর অভিনব ভাস্কর্য তৈরি করেছেন চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে অন্যতম সুমিত রায়। সংবাদমাধ্যমকে তিনি শুধু বলেছেন, ‘আমরা কয়েকজন মিলে এই ভাস্কর্য তৈরি করেছি। নিজেদের ভিতর থেকে উঠে আসা তাগিদ থেকেই এই মূর্তি বানিয়েছি।’ ভাস্কর্য তৈরির সঙ্গে পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে সংবাদমাধশ্যমকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘’’ আমরা এমন কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলাম, যা মানুষকে কথা বলতে এবং আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাবতে বাধ্য করবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুক্তচিন্তা ও সৃজনশীলতার প্রতীক এবং এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই মূল্যবোধগুলো আমাদের সমাজের জন্য অপরিহার্য। আমাদের প্রত্যাশা ভাস্কর্য মানুষকে সেন্সরশিপ এবং অন্যান্য ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলতে অনুপ্রাণিত করবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কবিগুরুর যে অভিনব ভাস্কর্য বসানো হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কবিগুরু মুখে রয়েছে নীল রঙের লিউকোপ্লাস্ট। অর্থাৎ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বরাবর উচ্চকণ্ঠ রবীন্দ্রনাথ এখানে নিজের মুখ বন্ধ রেখেছেন। আর তাঁর হাতে থাকা গীতাঞ্জলিতে পেরেক ঠুকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। অনেক পথচলতি মানুষ অভিনব ভাস্কর্যটির দিকে হা করে তাকিয়ে থাকছেন।