নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: নিজেদের ‘গদি’ বাঁচাতে ‘রাজনৈতিক প্রভুদের’ কুকীর্তি আড়াল করার পথে হাঁটল ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের কর্তারা। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যসূচি থেকে হঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং গুজরাত গণহত্যা তথা দাঙ্গার অধ্যায়। পরিবর্তে নয়া প্রজন্মের মগজধোলাইয়ের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে রাম মন্দির আন্দোলনের প্রসঙ্গ। যদিও শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, ‘শিক্ষায় গৈরিকীকরণ ঘটিয়েও ‘প্রভুদের’ কুকীর্তি মুছে ফেলতে পারবেন না এনসিইআরটি কর্তারা।
মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই দেশের ইতিহাস নতুন করে লেখার মরিয়া চেষ্টা চলছে। জীববিদ্যা থেকে রয়ায়ন, ইতিহাস থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান— নানা বিষয়ের কেন্দ্রীয় স্কুল পাঠ্যক্রম থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ দিয়ে হিন্দুত্ববাদের পাঠ দিয়ে নবীন পড়ুয়াদের মগজধোলাইয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজেপির রাজনৈতিক দয়ায় পদ পাওয়া এনসিইআরটি কর্তারা। যে কারণে গত বছর ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের অনুমোদিত বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকের ৩৩ জন লেখক চিঠি পাঠিয়ে ‘পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন কমিটি’ (টিডিসি) থেকে তাঁদের বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানের যে নয়া বই প্রকাশ করা হয়েছে তাতে অষ্টম অধ্যায়ে থাকা বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে। আগের বইয়ে লেখা ছিল, ‘বেশ নাটকীয় ঘটনায় ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বিতর্কিত পরিকাঠামো (যা বাবরি মসজিদ নামে পরিচিত ছিল) ধ্বংস করা হয়েছিল। ওই ঘটনা দেশীয় রাজনীতি ও পরিস্থিতির বদলের সূত্রপাত ঘটিয়েছিল। ভারতের বৈশিষ্ঠ্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু ওই ঘটনা ভারতীয় জনতা পার্টি ও হিন্দুত্বের উদয় হিসাবে ভূমিকা রেখেছিল।’
ওই ছত্র বদলে নয়া বইতে লেখা হয়েছে, ‘অযোধ্যার রামমন্দির নিয়ে কয়েক শতক ধরেই আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই চলছিল। ওই রাজনৈতিক বিবাদ ভারতীয় রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। রাম জন্মভূমি আন্দোলন মূল ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় ঘোষণার পরে রামমন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে।’