নিজস্ব প্রতিবেদনঃ গোঁফ নয় বরং লেজ দিয়েই বিচার করা যায় পশুপাখিদের নানা চরিত্র। মূলত পশুপাখিরা তাদের লেজ নানা কাজে ব্যবহার করে। তা গায়ে মাছি বা পোকা বসা ঠেকাতেই হোক কিংবা প্রভুর প্রতি ভালবাসা বোঝাতে লেজই তাদের হাতিয়ার। কিন্তু এর আরও কার্যকারিতা রয়েছে। জানেন কী? না জানলে এখনই জেনে নিন-
কুকুরঃ কথায় বলে কুকুরের লেজ কখনও সোজা হয়না। কিন্তু তা আদতে নয় কুকুরের চরিত্র বুঝতে বা নিজের অনুভূতি বোঝাতে কুকুরদের লেজই একমাত্র ভরসা। রাগ, ভয় বা প্রভুর প্রতি ভালবাসা বা আনুগত্য জানানো এইসব ক্ষেত্রেই লেজের উপর ভরসা রাখে কুকুরেরা। ভয় পেলে লেজ গুটিয়ে দু-পায়ের মাঝখানে ঢুকিয়ে নেয়, প্রভুর প্রতি ভালবাসা বা আনুগত্য দেখাতে জোরে লেজ নাড়ে। শুধু তাই নয় কৌতূহলী কুকুরছানা তার আশপাশের বিপদের আভাস জানতে লেজ খানিক নিচু করে মাটির সঙ্গে সমান্তরাল করে রাখে। তবে সবসময় শুধুই কুকুরের লেজ নয় তার শারীরিক ভাষার দিকেও নজর রাখতে হবে।
ঘোড়ার লেজঃ উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ার শীতপ্রধান অঞ্চলে ঘোড়ার উদ্ভব। শীতপ্রধান অঞ্চলের প্রাণী হওয়ার ফলে ঘোড়ার এই লোমশ লেজের অবস্থান। ঘোড়া তার লেজের নিম্নাংশ দুই পায়ের মাঝে রেখে শরীরের নিম্নাংশ গরম রাখে। ঘোড়ার তুলনায় জেব্রা ও গাধার লেজ খানিক ছোট হয়। শুধু তাই নয় লেজের সাহায্যে ঘোড়া শীতের সময় পেট উষ্ণ রাখে ও অবশ্যই পিঠে মাছি বসলে তা তাড়াতেও ব্যবহার করে।
ভোঁদড়ঃ উভচর প্রাণী ভোঁদড়, জলে-স্থলে সর্বত্রই তার বিচরণ। তবে জলেই তার অধিক দাপট। আর সেখানেই তাদের লেজ সবথেকে বেশি খেল দেখায়। তাদের ডিম্বাকৃতি লেজ জলের তলায় রাডারের মত কাজ করে। এটাই তাদের বিপদের সময় ও শিকার ধরার সময় সাহায্য করে। স্থলভাগে থাকাকালীন ভোঁদড় জোরে লেজ চাপড়ে শব্দ করে তার বাকি সঙ্গীদের বিপদের আগাম সতর্কতা দেয়। বাসা তৈরি করা থেকে শরীরে ভারসাম্য বজায় রাখতে ভোঁদড়ের লেজের বিশেষ ভূমিকা আছে।
শিয়ালমুখো হাঙ্গরঃ শিকার ধরতে ও সাঁতরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছাতে শিয়ালমুখো হাঙ্গর লেজকে এক মারাত্বক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে। ছোটমাছ ধরার সময় লেজের আঘাত করে মাছকে ঘায়েল করে শিকার ধরে এই জাতের হাঙ্গররা।
গিরগিটিঃ গিরগিটিকে আমরা মূলত ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানোর জন্যই চিনি কিন্তু তাঁর লেজের একাধিক ব্যবহার রয়েছে। বলে রাখা ভালো ৬ হাজারের বেশি সরীসৃপ নিয়ে তৈরি হয়েছে টিকটিকির প্রজাতি। তবে সেই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত গিরগিটির চরিত্রের স্বাতন্ত্রতা উল্লেখ করার মত। তাঁদের নানা শারীরিক বৈচিত্র মানুষকে রীতিমত তাক লাগায়। গিরগিটির লেজকে বলা হয় তাঁদের পঞ্চম পা। যার সাহায্যে তারা বিচক্ষণতার সঙ্গে শিকার ধরে। শুধু তাই নয় গাছে চড়তেও তাদের লেজের জুরি মেলা ভার। লেজের সাহায্যে গাছকে আঁকড়ে তারা ওঠে।