নিজস্ব প্রতিনিধি: বিপুল অভিযোগ জমা পড়ছে মুখ্যমন্ত্রীর Grievance Cell-এ। গত ৭ মাসে জমা পড়েছে প্রায় ২৯ হাজার অভিযোগ(Complaints)। অর্থাৎ প্রতি মাসে ৪ হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়ছে। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে(Sarasari Mukhomantri) ফোন করে এইসব অভিযোগ জানিয়েছেন আমজনতা। এনিয়ে প্রশাসনিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কেননা এই সব অভিযোগ জমা পড়েছে রাজ্যের শুধুমাত্র ১টি জেলা থেকে। আর সেই জেলাটি হল পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur)। সূত্রে খবর, গত জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে মোট ২৯ হাজার ৩৮১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এরমধ্যে বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদনই বেশি। বার্ধক্য ভাতা না পেয়ে জেলা থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে অভিযোগ করেছেন ১৭ হাজার ১৯২ জন। অন্যদিকে, রাস্তা চেয়ে প্রায় ৪ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। রেশন সংক্রান্ত অভিযোগ গিয়েছে ৩৭৪টি। ভূমি দফতরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ গিয়েছে ৯৪টি, কৃষি সংক্রান্ত ২৫৮টি, স্বাস্থ্য বিষয়ক ৯৮০টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
রাজ্যে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির ধাঁচে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এরজন্য একটি ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল। যে নম্বরে ফোন করে জনসাধারণ সরাসরি তাঁদের সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে পারেন। নম্বরটি হল – ৯১৩৭০৯১৩৭০। এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্যই ছিল, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই প্রশাসনিকভাবে তা সমাধান করা। খতিয়ে দেখতে এই বিপুল পরিমাণ অভিযোগ পাঠানো হয় জেলা প্রশাসনের কাছে। অভিযোগগুলির উপর রিপোর্ট তৈরি করে ফের তা নবান্নে পাঠানো হয় প্রশাসনের তরফে। সেই সূত্রেই দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকেই গত ৭ মাসে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র মাধ্যমে মোট ২৯ হাজার ৩৮১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২৬ হাজার ৭৯২টি অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার রিপোর্ট পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। ২৫৯৮টি অভিযোগের রিপোর্ট পাঠানো বাকি রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি জানিয়েছেন, ‘জেলা থেকে বহু মানুষই তাঁদের অভাব অভিযোগের কথা ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে ফোন করে জানান। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সেইসব অভিযোগ আমাদের কাছে পাঠানো হয়। সেইসব অভিযোগের ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তার রিপোর্টও সময়ের মধ্যে আমরা পাঠিয়ে দিচ্ছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সিংহভাগ অভিযোগের প্রেক্ষিতে অ্যাকশন টেকিং রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে যে প্রচুর অভিযোগ তাঁর Grievance Cell-এ গিয়েছে, তাও মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আছে। কয়েক মাস আগে এই জেলাতে এসেই তিনি বলেছিলেন, ‘একটা জেলা থেকেই যদি এতগুলি অভিযোগ আসে, তাহলে নিশ্চয়ই ধরে নিতে হবে কেউ কেউ কাজ করছেন না।’ যদিও প্রশাসনের আধিকারিকদের যুক্তি, মানুষ প্রশাসনের কাছে না গিয়ে সবকিছুতেই ফোন মারফত অভিযোগ জানিয়ে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। যদিও তাঁরা আমজনতার অভিযোগের সবরকম সমাধান করার চেষ্টা করছেন।