32ºc, Haze
Sunday, 2nd April, 2023 4:43 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশেষজ্ঞ থেকে চিকিৎসকেরা বার বার সাবধান করছেন কানে সারাক্ষণ হেডফোন(Head Phone) না লাগিয়ে রাখতে। শুধুমাত্র এই বদ অভ্যাসের জন্য দেশে প্রতিবছর শতাধিক কিশোর-কিশোরী থেকে তরুণ-তরুণী ট্রেনের ধাক্কায় মারা যান রেললাইন পার হতে গিয়ে বা তা ধরে হাঁটতে গিয়ে। আবার সারাক্ষণ কানে হেডফোন লাগিয়ে রাখার জেরে দেশের মধ্যে অনেকেই কানে কম শোনেন। কেউ কেউ তো বধিরও হয়ে গিয়েছেন। তার জন্যই চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞরা বার বার সাবধান করছেন সবাইকে যাতে তাঁরা কানে সারাক্ষণ হেডফোন না লাগিয়ে রাখেন। কিন্তু সেই সাবধানবাণী শুনছেন কয়জন? আর তাই অকালেই ঝরে যাচ্ছে জীবন। ঠিক যেমনটি ঘটেছে বাংলার(Bengal) পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার কালনা(Kalna) মহকুমার নাদনঘাটের(Nadanghat) উত্তর গোয়ালপাড়ায়। সেখানকার বাসিন্দা তথা কলেজ পড়ুয়া মুক্তা বসাক(১৯) মারা গিয়েছেন কানে হেডফোন লাগিয়ে ঘুমাতে গিয়ে।
আরও পড়ুন অপরাধ দমনে বড় পদক্ষেপ রাজ্যের, উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে
জানা গিয়েছে, রাতে হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে ঘুমোনো অভ্যাস ছিল মুক্তার। রবিবার রাতের খাওয়া সেরে ঘুমোনোর আগে সেভাবেই শুয়েছিল সে। একই খাটে পাশে শুয়েছিল তার মা ও ছোট বোন। সকালে ঘুম ভাঙছে না দেখে মেয়ের শরীরে হাত দিতেই চমকে ওঠেন মা। মেয়ের শরীর তখন বরফের মতো ঠান্ডা। তিনি চিৎকার করে উঠলে বাড়ির অন্যরা ছুটে আসে। সঙ্গে সঙ্গে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দেহ ময়না-তদন্তর জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন কালনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। ৩ বোনের মধ্যে বড় মুক্তাই। কালনা কলেজে কলা বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল সে। বাবা মাধব বসাক তাঁতের কাজ করেন। বড় মেয়ে যে আর নেই তা এখন বিশ্বাসই করতে পারছেন না মা মিনতি বসাক।
আরও পড়ুন বাংলার ১৫০০ গ্রাম ‘উন্মুক্ত শৌচমুক্ত’, রিপোর্ট কেন্দ্রের
মেয়ের মৃত্যুর প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘রাতে সবার সঙ্গে খেয়ে সাড়ে ন’টা নাগাদ শুতে গেল। মুক্তার সঙ্গে আমার ছোট মেয়েও শুয়েছিল খাটে। মেয়ে হেডফোন লাগিয়ে রাত পর্যন্ত গান শুনে ঘুমোত। এদিন সকালে উঠে দেখি, মুক্তার কানে হেডফোন লাগানো রয়েছে। কিন্তু মেয়ে উঠছে না। ডাকাডাকি করেও সাড়াশব্দ পাচ্ছিলাম না বলে গায়ে হাত দিতেই দেখি, ঠান্ডা। মেয়ের কোনও অসুস্থতা ছিল না।’ ঘটনা প্রসঙ্গে কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার চন্দ্রশেখর মাইতি বলেন, ‘প্রথমে ঠিক হয়েছিল ৪ সদস্যর টিম গঠন করে এখানেই ময়না-তদন্ত করা হবে। কিন্তু এখানে কোনও বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে শেষে বর্ধমানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিই। মনে হচ্ছে Heart Attack হয়েছে ঘুমের মধ্যেই। কানে হেডফোন থাকায় এটা হতে পারে।’