নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বাধীনতা দিবস(Independence Day) মানে কী আকন্ঠ মদ্যপান? এই প্রশ্নটা তুলে দিল স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যায় হাওড়া(Howrah) শহরে ঘটে যাওয়া এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। নিজের বাড়ির সামনে বসে এলাকার কিছু যুবকের মদ খাওয়ার প্রতিবাদ করায় তাদের হাতে বেধড়ক মার খেলেন এক চিকিৎসক(Doctor)। পুলিশ যদিও দ্রুত এই ঘটনার তদন্তে নেমে ১জনকে গ্রেফতার করেছে, কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন ওঠা থামছে না। প্রশ্ন আইনশৃঙ্খলার নয়, প্রশ্ন উৎসব উদযাপন মানেই কী আকন্ঠ মদ্যপান? সেইটাই কী উৎসবের উচ্ছ্বাসের একমাত্র প্রকাশের মাধ্যম? এ কোন মানসিকতায় আক্রান্ত হচ্ছে বাংলার সমাজ। বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়!
জানা গিয়েছে যে চিকিৎসকের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে তাঁর নাম লাল বৃন্দর বিক্রম সিং। তিনি থাকেন হাওড়া শহরের দাসনগর(Dasnagar) এলাকায় ১১ নম্বর পিসি লেনে। কিন্তু ব্যাঁটরা থানা(Bantra PS) এলাকার ৩৫/১ দশরথ ঘোষ লেনের ঠিকানায় তাঁর আরও একটি বাড়ি আছে। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি তাঁর বাবাকে নিয়ে সেই বাড়িতেই গিয়েছিলেন। গিয়ে দেখেন সেই বাড়ির বন্ধ সদর দরজার সামনে বসে মদ খাচ্ছে ৪-৫জন যুবক। বিক্রমবাবু এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই ওই যুবকদের সঙ্গে তাঁর বচসা বাঁধে। তারপরেই ওই যুবকেরা লোহার রোড ও কাঠের টুল দিয়ে তাঁকে মারধর করে। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছিনতাই করা হয় তার গলায় থাকা সোনার চেন, হাতের আংটি, মানিব্যাগ ও মোবাইল। ঘটনার সময় বিক্রমবাবুর বাবা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাঁকেও মারধর করা হয়। এই ঘটনার পরই সোজা ব্যাঁটরা থানার দ্বারস্থ হন বিক্রমবাবু। সেখানে ওই যুবকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
সেই অভিযোগের জেরে পুলিশ রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত তাপস মালকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনায় জড়িত ও তাপসের অপর ৩ সহযোগী রাজ মল্লিক, আকাশ পাল সহ আরও ৩জন এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ এদের সন্ধান শুরু করেছে। কিন্তু এই ঘটনার জেরে তীব্র অস্বস্তির মুখে পড়েছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। ঘটনার জেরে এদিন বিক্রমবাবু জানিয়েছেন, তিনি ওই যুবকদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁর বাড়ির সামনে বসে তারা মদ খাচ্ছে কেন। তার উত্তরেই তাপস ঝাঁখিয়ে উঠে বলেছিল, ‘আজ স্বাধীনতা দিবস। তাই মদ খাচ্ছি। আপনার কী হয়েছে। আমরা এলাকার মস্তান। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন তো এলাকায় ঢুকতে দেব না।’ এর জেরেই বাঁধে বচসা ও তারপরই ঘটে মারধরের ঘটনা।